সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলাটির রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম।
এর আগে ২৮-২৯ সেপ্টেম্বর মামলার চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে এই মামলার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত হলো।
মামলার চতুর্থ ধাপের প্রথমদিন মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ১৫তম সাক্ষী ছেনুয়ারা বেগমকে দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ওইদিন আলী আকবর ও হামজালালের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় তবে হামজালালের জেরা বাকি থাকে।
চতুর্থ ধাপের শেষ দিন বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) হামজালালকে জেরা দিয়ে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ফরিদুল মোস্তফা, সালেহ আহমেদ এবং বেবি বেগমের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার মাধ্যমে ওই মামলার চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণের সমাপ্তি হয়। তবে বেবি বেগমের জেরা বাকি রয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবর তার জেরার মাধ্যমে পঞ্চম দফা সাক্ষ্যগ্রহণের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হবে। এ নিয়ে এ মামলায় ৮৩ সাক্ষির মধ্যে চার দফায় মোট ২০ জন সাক্ষ্য দিলেন।
কক্সবাজার জজ ও দায়রা আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল অক্টোবরের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন।
পিপি ফরিদুল আলম জানন, ‘মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার চতুর্থ দফা সাক্ষ্যগ্রহণের পর এ পর্যন্ত ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। বাকি সাক্ষিদের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১০ থেকে ১২ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন বিজ্ঞ আদালত। আশা করি খুব দ্রুত বাকি সাক্ষিদের সাক্ষ্যগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হবে।’
উল্লেখ্য, গতবছর ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর মেরিনড্রাইভ চেক পোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে।
এ ঘটনায় সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ৫ আগস্ট ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকতসহ নয় জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে মামলা করলে আদালত মামলার তদন্তভার দেন র্যাবকে।
তাদের মধ্যে সাত জন পরদিন কক্সবাজারের আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন জন সাক্ষি এবং শামলাপুর চেকপোস্টের দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এ মামলায় ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খায়রুল ইসলাম।
মামলায় গ্রেপ্তার ১৪ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল ছাড়া ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এই ১৪ জনের বাইরে টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেবকে অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়। গত ২৪ জুন দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে তিনিও আত্মসমর্পণ করেন।
গত ২৭ জুন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল মামলাটির চার্জ গঠন করেছেন।