ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ার প্রতিবাদে টাঙ্গাইল জেলার বাস ও ট্রাক দ্বিতীয় দিনের মতো ধর্মঘটে। এতে বিপাকে পড়েছেন কর্মস্থলমুখী মানুষ। এসব মানুষের এখন সিএনজি অটোরিকশাই ভরসা। তবে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে তিনগুণ বেশি ভাড়া।
এছাড়াও এই বাহনে মহাসড়কে চলাচলে ঝুঁকি তো থাকছেই। এদিকে হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে মহাসড়কে সিএনজি অটোরিকশা দেখলেই মামলা দেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, শনিবার (৬ নভেম্বর) সকাল থেকে নতুন বাসস্ট্যান্ড ও ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে যাত্রীদের ভিড় রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে সারিবদ্ধভাবে বাস দাঁড়িয়ে রয়েছে। বাস না পেয়ে সিএনজি অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন মানুষ। আবার অনেকেই কয়েকটি স্থান থেকে যানবাহন পরিবর্তন করে কর্মস্থলে আসছেন। এতে করে সাধারণ মানুষের সময় ও টাকার অপচয় হচ্ছে।
যাত্রীরা জানান, টাঙ্গাইল থেকে চন্দ্রার বাস ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। সেখানে বাস বন্ধ থাকায় সিএনজি ভাড়া নিচ্ছে দুইশ থেকে আড়াইশ টাকা। ঢাকা মহাখালীর বাস ভাড়া গাড়িতে যেখানে ১৩০ থেকে ২৫০ টাকা, সেখানে কয়েকটিস্থানে গাড়ি পরিবর্তন করে যেতে খরচ হচ্ছে সাড়ে চার থেকে পাঁচশ টাকা।
টাঙ্গাইল শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে কথা হয় ঢাকার মিরপুরগামী সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর প্রতিবাদ জানিয়ে ধর্মঘট করছে বাস চালকরা। তবে আমাদের অফিস খোলা থাকায় তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে কর্মস্থলে যেতে হচ্ছে। যত ভোগান্তি আমার মতো সাধারণ মানুষের। একশ টাকার ভাড়া তিনশ টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে।
অপর যাত্রী লোকমান মিয়া বলেন, আজ (শনিবার) বিকেলে ঢাকায় আমার চোখের অপারেশন। ঘাটাইল থেকে টাঙ্গাইল শহরে আসতেই একশ টাকার উপরে খরচ হয়েছে। ঢাকার চক্ষু হাসপাতালে যেতেও আরও তিন চার জায়গায় গাড়ি পরিবর্তন করতে হবে। এতে একজনের ঢাকা যেতে পাঁচশ টাকার উপরে খরচ হয়।
মহাসড়কের রাবনা বাইপাসে কথা হয় ঢাকাগামী রাশেদ রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছি। বাস বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। এখন সিএনজি বা পিকআপে করে ঢাকায় যাবো।
সিএনজি অটোরিকশাচালক আজিজুল হক বলেন, আমরা মানুষকে সেবা করার লক্ষে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। আমাদের খরচ বেশি তাই ভাড়াও নিচ্ছি বেশি। তবে মির্জাপুর এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ সমস্যা করে। মামলা দিয়ে চার হাজারের বেশি টাকা নেয়। তবে পাঁচশ টাকা হাতে দিলে তখন মামলা দেয় না।
মির্জাপুরের গোড়াই হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজিজুল হক বলেন, মামলার টাকা ছাড়া সিএনজিচালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া হয়না। মহাসড়কে সিএনজি দেখলেই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।