দিনাজপুর জেলাকে বলা হয় শষ্যভান্ডার। দেশের সিংহভাগ ধান উৎপান হয়ে থাকে এই জেলায়। চলতি বছর জেলায় আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে। বিস্তীর্ণ মাঠে শোভা পাচ্ছে আমনের পাকা সোনালি ধান। ইতিমধ্যে ফসল তুলতে শুরু করেছেন কৃষক। জেলার অনেক জায়গায় তাই ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি অধিদপ্তর জানায়, দিনাজপুরের ১৩ টি উপজেলায় শুরু হয়েছে আমন ধানের কাটা ও মাড়াই। এ বছর ২ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে।
দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলার আমন ধানের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, যেসব জমির ধান কাটার জন্য উপযুক্ত হয়েছে, সেসব জমিতে নেমে পড়েছেন শ্রমিকরা ধান কাটার জন্য। শ্রমিকরা ধান কেটে তা মাঠে ৫ থেকে ৭ দিন শুকানোর জন্য ফেলে রাখছে। পরে সেগুলো আটিঁ বেঁধে গৃহস্থর খোলায় তুলে তা মাড়াই করে দিচ্ছেন। কাটা থেকে মাড়াই পর্যন্ত শ্রমিকরা বিঘাপ্রতি নিচ্ছেন ৩৩০০ থেকে ৩৫০০ টাকা।
গেলো ইরি মৌসুমে ধানের ফলন ভাল ও দাম মনোপুত হওয়ায় চলতি আমন মৌসুমে কৃষকরা বেশি করে আমন ধান লাগিয়েছেন। অনেকেই নতুন ধান ১০৮০ মণ দরে বাজারে বিক্রি করেছেন। ইরি ধানের মতো আমন ধানের ফলন ভাল হয়েছে, তাই কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। কিন্তু হঠাৎ তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে লোকসান গুণতে হচ্ছে কৃষকদের।
হিলির কয়েকজন ধান কাটা শ্রমিকরা রাইজিংবিডিকে বলেন, আমরা ১২ জনের একটি দল হিলির বিভিন্ন মাঠে আমন ধান কাটা-মাড়াই করছি। বিঘাপ্রতি ৩৩০০ থেকে ৩৫০০ টাকা নিচ্ছি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ বিঘা জমির ধান কাটা-মাড়াই করছি।
জেলার ঘোড়াঘাট উপাজেলার কৃষক জহুরুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে ইরি ধান আবাদ করেছিলাম। ভাল ধান এবং দাম বেশি পাওয়ায় এবার আমন ধান লাগিয়েছি। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ৫ বিঘার মতো ধান কাটা-মাড়াই হয়ে গেছে। বাজারে দাম পেয়েছি ১০৮০ টাকা করে। বাঁকি ধানের বাজারও ভালো পাবো আশা করছি।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিসার এখলাছ হোসেন সরকার বলেন, ‘এই মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলায় ১১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। এবারও ধানের ফলন ভালো হয়েছে, আমরা পুরো আমন মৌসুমে কৃষকদের সেবা দিয়ে আসছি।’
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহো বলেন, ‘চলতি আমন মৌসুমে জেলার ১৩ টি উপজেলায় ২ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না থাকায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় ২০ শতাংশ ধান কাটা ওমাড়াই হয়ে গেছে। প্রতিটি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ও কর্মীরা কৃষকদের পাশে থেকে সেবা দিয়ে আসছে।’