সারা বাংলা

পাবনার খ্রিস্টান পল্লীতে উৎসবের আমেজ

বড়দিন উদযাপনকে সামনে রেখে পাবনায় খ্রিস্টান পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। উপাসনালয় ও বাড়িতে আলোকসজ্জা, গোশালা তৈরি, ক্রিসমাস ট্রি সাজানোসহ নানা প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ৩০টি গ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ।

পাবনায় এবার ২৩টি গীর্জায় বড়দিনের প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হবে।

স্বজনদের সঙ্গে বড়দিনের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন খ্রিস্টান ধর্মাবল্বীরা। বড়দিন ঘিরে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে বাড়ির গৃহিনীদের ব্যস্ততাও কম নয়। বাড়িঘর আলোকসজ্জা আর পিঠাপুলির আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। করোনার কারণে গত দু’বছর বড়দিন উৎসবের রঙে ভাটা পড়লেও, এবার তাদের প্রত্যাশা সবার সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে তারা বড়দিনের উৎসব পালন করতে পারবেন।

পাবনা শহরের উত্তর শালগাড়িয়া মহল্লার বাসিন্দা কলিট তালুকদার ও তার স্ত্রী ঝিনুক রোজারিও বলেন, বড়দিন উপলক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। আমাদের প্রভু যিশু খ্রিস্ট বেথেলহামের যে গোশালায় জন্মেছিলেন, তার আদলে বাড়িতে গোশালা স্থাপন ও সেটিকে সাজিয়ে পরিপূর্ণ করেছি। সব মিলিয়ে আমরা যতটুকু পারছি বড়দিনকে উদযাপনের আয়োজন সম্পন্ন করেছি।

দক্ষিণ রাঘবপুর এলাকার বাসিন্দা সিজার ডি কস্তা ও তার স্ত্রী রীনা বর্মন বলেন, বড়দিনের আনন্দ ভাগ করে নিতে বিভিন্ন স্থান থেকে আমাদের আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে এসেছেন। আমরা ঘর সাজিয়েছি, ক্রিস্টমাস ট্রি সাজিয়েছি। অতিথিদের জন্য পিঠাপুলি, পায়েশসহ বিভিন্ন খাবার তৈরী করেছি।’

পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের সাধারণ সম্পাদক উত্তম দাস বলেন, ‘বড়দিনকে ঘিরে পাবনা ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ সপ্তাহব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এসব আয়োজনের মধ্যে রয়েছে নগর কীর্তন, বড়দিনের উপাসনা, কেক কাটা, পিঠা পর্ব, প্রীতিভোজ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আমরা আশা করি প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের বড়দিনের উৎসব উদযাপন করতে পারবো।’

ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পালক মি. ইসহাক সরকার ও চাটমোহরের মথুরাপুর ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার শিশির নাতালে গ্রেগরি বলেন, যিশু খ্রিষ্টের বানীতে জগতে শান্তি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা হোক। সবার মধ্যে মিলন ভাতৃত্ব বজায় থাকুক। যিশু জগতে আসেন মানুষকে মুক্তি দিতে। মানুষের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি আমাদের পাপ থেকে পরিত্রাণের জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন। তাই এ দিনটিকে আমরা বড়দিন হিসেবে উদযাপন করি। 

পাবনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিবুল ইসলাম খান বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে বড়দিন উদযাপন করতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব চার্চে পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকি পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। চেক পোস্ট থাকবে পাশাপাশি মোবাইল টিম থাকবে। ইতোমধ্যে সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশও কাজ করছে।’