টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গত বছরের ২০ নভেম্বর কিস্তি আদায় করতে গিয়ে নিখোঁজ হন মিরা খাতুন (৩২) নামে এক এনজিও কর্মী। ওই দিন রাতেই স্বামী মো. রাজিব মিয়া বাদি হয়ে ভূঞাপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। কিন্তু এখনো তার কোনো সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ।
এমন পরিস্থিতিতে সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে মিরা খাতুনের পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ মিরা খাতুনের বড় ছেলে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র মিরাজ হোসেন ও ছোট ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মুকিত হোসেন। এ সময় তারা তাদের মাকে খুঁজে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।
আরো পড়ুন: পাঁচ দিনেও খোঁজ মেলেনি এনজিও কর্মীর
সংবাদ সম্মেলনে মিরা খাতুনের মা হুসনেয়ারা বেগম বলেন, ‘দেড় বছর ধরে মিরা বেসরকারি সংস্থা সোসাইটি ফর সোস্যাল সার্ভিস (এসএসএস)-এর ভূঞাপুর উপজেলার ফলদা শাখায় মাঠ সংগঠক হিসেবে চাকরি করছেন। প্রতিদিনের মতো আমার মেয়ে ভূঞাপুরের ফলদা শাখা থেকে কিস্তি উত্তোলনের জন্য বের হয়। পরে সে মাইজবাড়ি, ঝনঝনিয়া হইতে কিস্তি আদায় করে। এরপর চন্ডিপুর ও হিন্দুপাড়ায় কিস্তি আদায় করতে যাওয়ার সময় সে নিখোঁজ হয়। তাকে আর পাওয়া যায়নি। অফিসের অন্য কর্মরতরা মিরা খাতুনের মোবাইল ফোনে একধিকবার ফোন করলেও সে ফোন ধরেনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘ওই দিন রাত ভূঞাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন এসএসএস ফলদা শাখার ম্যানেজার বন্যা আক্তার। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও এখনো কোনো প্রকার সহযোগিতা পায়নি আমরা। পুলিশকে সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম বললেও তাদের বিরুদ্বে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যেদিন থেকে আমার মেয়ে নিখোঁজ সে দিন থেকে এলাকার বেশ কিছু লোক নিখোঁজ রয়েছে অথচ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। প্রশসানের কাছে একটি দাবি আমার মেয়ের সর্ব শেষ অবস্থা জানতে চাই। তাকে কেউ হত্যা করেছে নাকি গুম করেছে সে বিষয়ে জানতে চাই।’
মিরা খাতুনের বড় ছেলে মিরাজ হোসেন বলেন, ‘রাতে বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরেছি মা নিখোঁজ হয়েছে। মার মতো কেউ আদর করে না। আমার মাকে ফেরত চাই।’
ছোট ছেলে মুকিত হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল বেলা মা আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে স্কুলে পাঠাতো। এখন আর কেউ ডাক দেয় না। মাকে ছাড়া একটি মুহূর্ত ভাল যায় না। আমার মায়ের সন্ধান চাই।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আব্দুল ওহাব বলেন, যেহেতু মামলাটা অনেক স্পর্শ কাতর তাই খুব সাবধানে কাজ করছি। প্রথমে তারা কোন তথ্যই দিতে পারেনি তাই আমরা আমাদের মতো করে কাজ করেছি। ভুক্তভোগী ফোন ব্যাবহার না করায় তাকে খুঁজে পেতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে খুব দ্রুতই আমরা তার সন্ধান পাব বলে আশা করছি।’