পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পাহাড় আর হ্রদের শহর রাঙামাটিতে জমেছে উৎসবের আমেজ। হাজারো পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি শহর রাঙামাটি। ঈদের ছুটির সাথে সরকারি বন্ধ যোগ হওয়ায় দীর্ঘ ছুটির আমেজ নিয়ে এই পাহাড়ী শহরে বেড়াতে এসেছেন কয়েক হাজার ভ্রমনপিয়াসী পর্যটক। পর্যটন ব্যবসায় জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার করোনাভাইরাসের প্রকোপ না থাকায় টুরিস্টরা রাঙামাটিতে বেড়াতে আসছেন।
অবসরে নগর জীবনের কোলাহল থেকে খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে ইট-পাথরের শহর ছেড়ে হ্রদ-পাহাড়ের শহরে ভিড় জমাচ্ছেন হাজারো পর্যটক। দেশের বিভিন্ন্ স্থান থেকে আসা পর্যটক অবসরে ছুটে যাচ্ছেন রাঙামাটিতে। পর্যটকদের জন্য মনোমুগ্ধকর কাপ্তাই হ্রদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও পর্যটন কমপ্লেক্স এলাকায় হ্রদের ধারে দুই পাহাড়ের মাঝখানে স্থাপিত আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতু, পুলিশ পলওয়েল পার্ক, ডিসি বাংলো, রাজবন বিহার, বার্গী টুরিস্ট স্পট কিংবা আসামবস্তী-কাপ্তাই সড়কের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করতে আসছেন টুরিস্টরা। বর্তমানে শহরের সরকারি রেস্ট হাউজ থেকে শুরু করে আবাসিক হোটেলগুলোতে রয়েছে প্রায় ৬০-৭০ ভাগ বুকিং।
বৈরী আবাহওয়ার মধ্যেও রাঙামাটিতে ঘুরতে আসা পর্যটকরা বলছেন, রাঙামাটি অত্যন্ত সুন্দর একটি শহর। এখানকার ঝুলন্ত সেতু, কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দৃশ্য দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে কিছু পর্যটক পর্যটন মোটেল এলাকায় পার্কিংয়ের জন্য অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে অভিযোগও করেছেন।
এদিকে চট্টগ্রামের মীরসরাই থেকে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা কলেজ ছাত্র দিশান বলেন, বন্ধুরা সবাই মিলে রাঙামাটি ঘুরতে আসছি। এখানকার লেক, সবুজ পাহাড় খুবই সুন্দর।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা তরুণী দীপা বড়ূয়া ও স্মৃতি সুত্র ধর বলেন, কাপ্তাই হ্রদের মনোরম দূশ্য, ঝুলন্ত সেতু, সবুজ পাহাড় দেখে আমরা খুবই অভিভূত। প্রকৃতির রূপ যে এত সুন্দর হতে পারে তা ভাবতেই অবাক লাগে।
রাঙামাটি পর্যটন নৌযান ঘাট ম্যানেজার মো. রমজান আলী জানান, দুই বছর করোনার ফলে পর্যটকরা আসতে পারে নাই। তবে এবার ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকরা রাঙামাটিতে আসলেও বৃষ্টির কারণে ঘুরতে পারছেন না। এতে করে বোট ভাড়াও কম হচ্ছে।
খুলনা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে আসা মো. আসাদ বলেন, আমরা প্রথমবার রাঙামাটিতে ঘুরতে এসেছি। ঝুলন্ত সেতু, পলওয়েল পার্ক, লেক অনেক জায়গায় ঘুরলাম, খুবই ভালো লাগছে।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক, সৃজন বিকাশ বড়ূয়া বলেন, বর্তমানে মোটেলে ৭০ ভাগ রুম বুকিং রয়েছে। আজকেও (৪ মে) দুপুর পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার টুরিস্ট ভ্রমণ করেছেন।
রাঙামাটির এ নয়নাভিরাম স্পট সত্যিই যেন পর্যটককে কাছে টানে। শিহরিত করে তোলে স্বচ্ছ কাপ্তাই হ্রদের জলে নৌ-বিহারের মতো রোমাঞ্চকর নৌ-ভ্রমণ।