চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণে বিপুল সংখ্যক হতাহত মানুষকে উদ্ধার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করে মানবিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে চট্টগ্রামবাসী।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এর পর যখন আহত ব্যক্তিদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা শুরু হয় তখনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানবিকতার ডাক আসে। কেউ দগ্ধ ও আহতদের হাসপাতালে আনতে, কেউ রক্ত দিতে, কেউ ওষুধ, চিকিৎসা উপকরণ যোগাড় করতে মাঠে নেমে পড়েন।
প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবহারের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে দেখা গেছে অনেককেই
শনিবার গভীর রাত থেকে সকাল ৯টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্তত ১০ থেকে ১২টি মানবিক সংগঠন এবং এককভাবে অনেকেই হতাহতদের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন কয়েকটি ফার্মেসি বিনামূল্যে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য ওষুধ ও চিকিৎসা উপকরণ বিতরণ করেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, আগুনের খবর পেয়েই দগ্ধদের সহায়তায় রাতেই মাঠে নেমে পরে ‘এক টাকার আহার’, ‘নগর তারা ফাউন্ডেশন’, ‘গাউছিয়া কমিটি বাংলাদেশ’, ‘চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ’, ‘স্বেচ্ছাসেবক লীগ’, ‘ছাত্রলীগ’, ‘স্মাইল বাংলাদেশ’, ‘রেড ক্রিসেন্ট’, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশন’, ‘সন্ধানী’, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’সহ নাম না জানা অনেক সংগঠন এবং স্বেচ্ছাসেবীরা।
এছাড়া বিভিন্ন সিএনজি অটোরিক্সা, টেম্পু, হিউমেন হলার চালকরা বিনাভাড়ায় স্বপ্রণোদিত হয়ে আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েছেন।
সরকারি সংস্থা ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ, মহানগর পুলিশ, র্যাব-৭, আনসার বাহিনী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রত্যোক্ষ ও পরোক্ষভাবে এই দুর্যোগ মোকাবিলায় এগিয়ে এসেছে তাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য নিয়ে।
অনেকেই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করছেন হাসপাতালে
গাউছিয়া কমিটি ইতোমধ্যে আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি নিহতদের দাফনের দায়িত্ব নিয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের সামনে হাসান ফার্মেসি নামের একটি ফার্মেসি দগ্ধ রোগীদের জন্য বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করছে।
এদিকে চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ ও ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম মেডিক্যালে ওষুধ, চিকিৎসা উপকরণ, খাবার পানি, শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করছে। এছাড়া সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা রোগীদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সেবা দিয়ে যাচ্ছে।