পৃথিবীতে প্রায় ৩০০ জাতের ছাগল আছে। এর মধ্যে দেশের কালো ছাগল বা ব্ল্যাক বেঙ্গলকে অন্যতম সেরা জাতের ছাগল বলা হয়।
ব্ল্যাক বেঙ্গল বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং ওড়িশা অঞ্চলের পাওয়া যায়। এ ছাগল অধিকাংশ কালো হলেও বাদামী, ধূসর ও সাদা বর্ণেরও হয়।
এই ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন সাতক্ষীরার তালার মফিজুল ইসলাম।
তালা উপজেলা সদরের মাঝিয়াড়া গ্রামের মফিজুল ইসলামের সফলতা দেখে গ্রামের অনেকে এখন এই জাতের ছাগল পালনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। মফিজুল ইসলাম বলেন, এক সময় ঢাকার একটি গার্মেন্টেসে কাজ করতাম। হঠাৎ একদিন ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার সময় কোনো একটি বাড়ির ছাদের ওপর ছাগলের খামার দেখতে পাই। এই বিষয়টা পরবর্তীতে আমাকে খামার গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করে।
তিনি জানান, ২০১৯ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর তিনি ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে আসেন। কিছু দিনের মধ্যে গড়ে তোলেন ছাগলের খামার। শুরুতে ছাগলের সংখ্যা ছিল ১৯টি। এখন তার খামারে ছোট বড় মিলিয়ে ছাগলের সংখ্যা ৬০টি। এছাড়া, ছাগল বিক্রি করে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করেছেন। খামারে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের পাশাপাশি দেশি ছাগলও রয়েছে।
মফিজুল ইসলাম বলেন, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল বছরে দুই বার বাচ্চা দেয়। প্রতিবার ২ থেকে ৪টা বাচ্চা হয়। রোগ-বালাইও কম হয়। বছরে একবার টিকা দিলেই আর কোনো ওষুধ লাগে না। একটি ছাগল প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ টাকার খাদ্য খায়। ছাগলকে খাওয়ানো হয় গম, ভুট্টা, ছোলা বুটের গুড়ো ও ঘাস। তাই অল্প খরচে বেশি আয় করা সম্ভব।
তালা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাছুম বিল্লাহ জানান, দেশি ছাগলের পাশাপাশি আমরা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন করার জন্য উপজেলাতে ১০ জনকে প্রশিক্ষণ ও দুই জনকে টাকা দিয়েছি। উপজেলাতে মোট ১১৯টি ছোট বড় ছাগলের খামার রয়েছে। মোট ছাগল রয়েছে ৪৭ হাজার ৫৫১টি।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ বি এম আব্দুর রউফ বলেন, দেশীয় ছাগলের পাশাপাশি ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের মাংসের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি দামও ভালো হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে জেলায় অনেক খামার গড়ে উঠেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা নিয়মিত তাদের ওই ছাগলের খামার পরিদর্শন করি। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ওষুধ ও সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছি।