চট্টগ্রাম থেকে বগুড়ার বাফার গুদামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রাকগুলো থেকে আসল টিএসপি সার আনলোড করে ভেজাল সার লোড করা হয় সাভারের হেমায়েতপুরে। এরপর সেগুলো বগুড়ায় নিয়ে আসা হয়। আটকের পর ট্রাকগুলোর ১৩ চালক ও হেলপার র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য দিয়েছেন।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) র্যাব-১২-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাহিনীটির কোম্পানি কমান্ডার তৌহিদুল মবিন খান।
তৌহিদুল মবিন খান বলেন, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে ১২ ট্রাক সার নিয়ে গত ২৭ আগস্ট ট্রাক চালকরা রওনা দেন। এরপর থেকেই দেশের শীর্ষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা পতেঙ্গা থেকে পুরো প্রক্রিয়াটিকে তাদের নজরদারিতে রাখে। এসময় হেমায়েতপুরে সারে ভেজাল দেওয়ার বিষয়ে সংস্থাটি নিশ্চিত হয়। এসংক্রান্ত ভিডিও ফুটেজ ও যাবতীয় প্রমাণ র্যাবকে জানায় গোয়েন্দারা। এরপর বগুড়া জেলা প্রশাসনকে সার খালাস প্রক্রিয়া বন্ধ করতে অবগত করা হয়।
আরো পড়ুন: ৭ ট্রাক টিএসপিতে ভেজাল প্রমাণিত, আটক ১৩
২৯ আগস্ট রাতে ৭টি ট্রাক বগুড়ার বাফা গুদামে এসে পৌঁছায়। পরে ট্রাকগুলো থেকে সার খালাস না করে আটক করে রেখে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে আটক ট্রাকগুলো থেকে নমুনা নিয়ে রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের ল্যাব পরীক্ষায় ভেজাল বলে প্রমানিত হয়।
তৌহিদুল মবিন খান আরো বলেন, ৭ ট্রাকের ১৩ জন শ্রমিক এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তারা কাজ করে চট্রগ্রামের দেওয়ান হাটের এমএইচআর এন্টারপ্রাইজ নামের পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে। ওই প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমেই এই সারগুলো পরিবহন করা হচ্ছিল। যে কারণে আটক ১৩জনসহ ওই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জনান, চট্টগ্রাম টিএসপি সার কারখানার কর্মকর্তারা বগুড়ায় আসছেন। তারা এ ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করবেন। এছাড়াও বাফা গুদামে আটক থাকা আরও ১১ ট্রাকসহ চালক ও সহকারীদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। পরীক্ষার প্রতিবেদন আসার পরে এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত সোমবার (২৯ আগস্ট) চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে ৭ ট্রাক ও মঙ্গলবার ১০ ট্রাক মোট ১৭ ট্রাকভর্তি টিএসপি সার বাফা গুদামে আসে। ৪ হাজার ৭৬০ বস্তায় ২৫২ টন টিএসপি সার পাঠানো হয় ট্রাকগুলোতে। তবে যে সারগুলো আসছে সেগুলোতে ভেজাল আছে এমন গোপন সংবাদে বাফা গুদাম কর্তৃপক্ষ সারের ট্রাকগুলো গুদামে পৌঁছার পর খালাসের আগে ভালোভাবে চেক করে। এ সময় ভেজাল মনে হলে তারা চট্টগ্রাম টিএসপি সার কারখানা কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানান। সার পরীক্ষার জন্য টিএসপি কমপ্লেক্সের উপপ্রধান রসায়নবিদ রেজাউল হক, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মাজহারুল ইসলাম ও সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আউয়াল হোসেনকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের একটি টিম বগুড়ায় আসেন। তারা নমুনা সংগ্রহ করে ফিরে যান। সে সময় তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিলো ৩ কার্যদিবসের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন ও প্রতিবেদন পেশ করা হবে।