ভোলায় বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু ও নিউমোনিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিনই এসব রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। তবে ডেঙ্গুর তুলনায় নিউমোনিয়ার প্রকোপ তুলনামূলক বেশি।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোলা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, মহিলা ও পুরুষ মেডিসিন ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের জন্য নেই আলাদা ইউনিট। শয্যা সংকট থাকায় একটি বেডে গড়ে ২-৩ জন রোগীকে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এতে অন্য রোগীরাও ঝুঁকিতে রয়েছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, গত এক মাসে জেলায় ৩৮৫ জন শিশু নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ জন।
রোগীর স্বজন জিয়া উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘জেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। যদিও হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তবে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য আলাদা ইউনিট রাখার নিয়ম থাকলেও তা রাখা হয়নি। এতে রোগীর সঙ্গে আসা স্বজন ও অন্যান্য রোগীদের মধ্যে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। আশা করছি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবেন।’
আরেক রোগীর বোন মরিয়ম বলেন, ‘প্রথমে বোনের জ্বর হয়েছে। পরে ডাক্তারের পরামর্শে পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। খুবই চিন্তায় আছি।’
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীদের চাপ বাড়ছেই। হঠাৎ করে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
শিশু ওয়ার্ডের দায়িত্বরত একজন নার্স বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতিদিন যেসব রোগী ভর্তি হচ্ছে, তাদের বেশিরভাগই নিউমোনিয়া আক্রান্ত। চাপ বেড়ে যাওয়ায় একটু হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়া হচ্ছে।’
ভোলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রাসেল আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ঢাকার সঙ্গে নৌ পথে ভোলার যোগাযোগ রয়েছে। যাতায়াতের সময় লঞ্চের পরিবেশ বা অন্য কোনও কারণে ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। এছাড়া বাসায় জমে থাকা পানি, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ বা অসচেতনটার কারণেও ডেঙ্গু ছড়াতে পাররে। রোগীদের প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের মাঝে নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের আরও যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।