সারা বাংলা

ফরিদপুরে অনেক এলাকায় নেই বিদ্যুৎ

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে গত রোববার থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে ফরিদপুরের অনেক এলাকার মানুষজন। ঝড়ের কারণে তার ছিড়ে এবং বৈদ্যুতিক খুটি উপড়ে গিয়ে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় ওই সব এলাকার মানুষজন চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাতাস ও বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে থাকায় ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলায় রোববার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। ঝড়ের সময় গাছপালা ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। পরে জেলার কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিল হলেও এখনও অনেক উপজেলাতে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি।

জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার ৪ টি ইউনিয়নের একটি এলাকয় শুধু বিদ্যুৎ এসেছে বলে জানা গেছে। এই উপজেলার হাজিগঞ্জ বাজারের ব্যাবসায়ী ফরহাদ হোসেন বলেন, রোববার বিদ্যুৎ গেছে। আজ বুধবার। এখনো বিদ্যুতের কোনো খবর নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় অচল হয়ে পরেছে কল-কারখান ও বসতবাড়ির ফ্রিজ। এছাড়া গরমে বাচ্চারা অনেক কষ্ট পাচ্ছে।

সদর উপজেলার ওয়েষ্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড কোম্পানির (ওজোপাডিকো) বৈদ্যুতিক সংযোগ সচল হয়েছে। তবে এখনো সচল হয়নি পল্লী বিদ্যুতের সংযোগগুলো।

সদরপুর উপজেলার বাসিন্দা নিজাম ফকির বলেন, ‘সদরে বিদ্যুৎ আসলেও আকোটের চর ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ না আসার কারণে মোবাইল ফোনসহ ইলেকট্রিক ডিভাইসগুলো অচল হয়ে পড়েছে। ফলে আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছি।’

আলফাডাঙ্গা উপজেলা থেকে মিয়া রকিবুল বলেন, ‘সদর বাজারে বিদ্যুৎ আসলেও বাকি ৬ টা ইউনিয়নের কোথাও বিদ্যুৎ নেই।’

ভাঙ্গা থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, ‘ভাঙ্গা সদরে গতকাল রাত ৮ টার দিকে বিদ্যুৎ এসেছে।’ 

ফরিদপুরের আইন সহায়তা কেন্দ্রের (আসক) সভাপতি রিফাত ইসলাম বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ পেয়েছি। তবে নর্থ চ্যানেলসহ চরাঞ্চলে এখনও বিদ্যুৎ যায়নি বলে শুনেছি।’

সালথা, নগরকান্দা, ও মধুখালী উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওইসব এলাকায় গতকাল রাত ৮ টার পর থেকেই বিদ্যুৎ সচল হয়েছে। তবে আজকে কয়েকবার লোডশেডিং হয়েছে।’

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত চরভদ্রাসনের বাসিন্দা মো. মিজান বলেন, ‘আমার ঘরের ওপর গাছ পড়ে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। আমি বারবার ফোন দিয়েও বিদ্যৎ অফিসে লাইন পাইনি। তাদের ফোন নম্বর সব সময় ব্যস্ত দেখায়।’

ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) ফরিদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক খান  বলেন, ‘ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকার সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। তবে গতকাল দুপুর ২ টার মধ্যে আমরা সংযোগ পুনঃস্থাপন করি। লাইন এখন সচল।’

ফরিদপুর পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসান বলেন, ‘প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ লাইন আমাদের। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এ আমাদের লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। এখনও কাজ চলছে। গতকাল রাত ৮টা থেকে সংযোগ সচল হওয়া শুরু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দীর্ঘ সংযোগ পুনঃস্থাপনে সময় লাগছে। প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। তবে আশা করি বুধবার বিকাল ৪/৫টার মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগগুলো সচল হবে।’