ডলার সংকট এবং বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানিতে রীতিমত ধস নেমেছে। গত আগস্ট মাস থেকে ক্রমাগত কমছে এই বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং। এর ফলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমেছে রাজস্ব আয়। গত তিন মাসে চট্টগ্রাম কাস্টমসে রাজস্ব আয় কমেছে হাজার কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো এলসি খুলতে অনীহা প্রকাশ করায় বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। আবার অনেক আমদানিকারক ডলারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে এই সময়ে আমদানি থেকে বিরত আছেন।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন গার্মেন্টস বাইরে থেকে অর্ডার না পাওয়ায় এবং অনেক অর্ডার বাতিল হয়ে যাওয়ায় কমেছে রপ্তানিও। ফলে বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে গেছে।
বন্দর থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯২০ ইউনিট, সেপ্টেম্বর মাসে এই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৩। গত অক্টোবর মাসে এই সংখ্যা আরও কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ৫৩৮ ইউনিট।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক কনটেইনার হ্যান্ডলিং কমে যাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে এখন সাময়িক মন্দা চলছে। গত আগস্ট মাস থেকে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ক্রমাগত কমেছে। ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানি ও রপ্তানি কমিয়ে দেওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মন্দা কাটিয়ে আগামীতে কনটেইনার হ্যান্ডলিং বেড়ে যাবে বলে আশা করছি।’
এদিকে আমদানি-রপ্তানি কমে যাওয়ার ফলে রাজস্ব আয়ে বড় প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসে। গত আগস্ট মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ক্রমাগত কমেছে রাজস্ব আয়। গত আগস্ট মাসে আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যে কাস্টমস-এর রাজস্ব আয় ছিলো ৫ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে এই আয় কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১০৫ কোটি টাকা। সর্বশেষ অক্টোবর মাসে কাস্টমসের আয় হয় ৪ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। আগস্ট মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত রাজস্ব আয় কমেছে ১ হাজার ৮৭ কোটি টাকা।