দ্বীপজেলা ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়া নদীতে ফের দেখা দিয়েছে ইলিশ সংকট। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন উপকূলের জেলেরা। সারাদিন জাল বেয়েও কাঙ্খিত পরিমাণ ইলিশ না পেয়ে হতাশ তারা। যে কারনে পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাছে তাদের।
জেলা মৎস্যবিভাগ জানায়, পলি জমে থাকায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। কোথাও আবার ডুবোচর জেগে উঠেছে, তাই সাগর থেকে নদীতে আসতে পারছে না ইলিশ। বাঁধা পেয়ে তাই দিক পরিবর্তন করছে। যে কারণে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে না কাঙ্খিত ইলিশ।
উপকূলের বিভিন্ন মাছ ঘাট ঘুরে ও জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইলিশের প্রধান প্রজনন সময়ে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে নদী ও সাগরে ইলিশ ধরা শুরু করেন জেলেরা। সে সময় নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা বেশিদিন ছিল না। গত ১০/১১ দিন ধরে নদীতে দেখা নেই ইলিশের।
লালমোহন উপজেলার গজারিয়া খালগড়া মৎস্য ঘাটের জেলে আলী হোসেন ও বেলায়েত হোসেন বলেন, নিষধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পরপরই ভালো পরিমাণ ইলিশ ধরা পড়েছে। দিন যতো গেছে ইলিশ পাওয়ার পরিমাণও কমেছে নদীতে। এখন মাছ ধরতে নদীতে যেতে ট্রলারের যে পরিমাণ তেলের প্রয়োজন হয় সে তেলের খরচও উঠছে না মাছ বিক্রির টাকায়।
একই ঘাটের আড়তদার মো. ফারুক বলেন, ‘নদীতে মাছ না থাকায় আড়তগুলো ঝিমিয়ে পড়েছে। এখন এখানে মাছের তেমন বেচাকেনা হচ্ছে না। জেলেরা আমাদের মাছ দিতে পারছে না, আমরাও বিক্রি করতে পারছি না।’
চরফ্যাশন উপজেলার মৎস্য ঘাটের জেলে মফিজ ও মনিরসহ অন্যরা জানান, অবরোধের পর ২/৩ দিন নদীতে ইলিশ ধরা পড়লেও এখন আর সে চিত্র নেই। তেলের খরচ না উঠায় অনেকেই অভিমানে নদী যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
জেলে হানিফ মাছি বলেন, ‘দুই দিন আগে নদীতে গেছিলাম। ৩ হাজার টাকার তেল খরচ হয়েছে। কিন্তু মাছ পেয়েছি মাত্র ৭০০ টাকার।’
মৎস্যবিভাগে জানায়, নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে গত ১৫ দিন ইলিশ আহরণ হয়েছে মাত্র ৭৫০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে শুরুর তিন দিনেই আহরণ হয়েছে ২৬০ মেট্রিক টন।
ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্ল্যাহ বলেন, ‘মেঘনা নদীর মোহনায় পলি জমে থাকায় ইলিশ উপকূলের দিকে আসতে পারছে না। জরুরি ভিত্তিতে নদীতে ড্রেজিং প্রয়োজন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ইলিশের আরও সংকট দেখা দেবে।’