নির্মাণাধীন সেতু দেবে যাওয়ার ঘটনায় টাঙ্গাইল পৌরসভার তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে মেয়রকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২০ নভেম্বর) রাতে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পৌর-১ শাখার উপ-সচিব মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত প্রকৌশলীরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী, সহকারী প্রকৌশলী রাজীব গুহ ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিন্নাতুল হক। এদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, নির্মাণাধীন সেতুটির ঢালাই কাজের পূর্বে সেন্টারিং ও সাটারিংয়ের সময় ঠিকাদার ড্রয়িং ও ডিজাইন অনুসরণ না করে বল্লি ও বাঁশের খুঁটি ব্যবহার করে। এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রকৌশলীরা শুধু চিঠির মাধ্যমে তাদের নিষেধ করেন। তারা ঢালাইয়ের কাজ বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং ঢালাইয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন। এটিকে দায়িত্বে চরম অবহেলা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে সেতু নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে জেনেও কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া, কাজের অগ্রগতির তুলনায় অতিরিক্ত বিল প্রদান করার অভিযোগে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া সেতুটি নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ‘ব্রিকস অ্যান্ড বিল্ডিং লিমিটেড’ ও ‘দ্যা নির্মিতিকে (জেভি)’ সেতু নির্মাণে ডিজাইন ও প্রাক্কলন যথাযথ অনুসরণ না করায় কালো তালিকাভুক্ত করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পৌর মেয়র সিরাজুল হক বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এ সংক্রান্ত চিঠি পেয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই চিঠির জবাব দেওয়া হবে। এছাড়া তিন প্রকৌশলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুন রাতে বেড়াডোমা এলাকায় লৌহজং নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতু দেবে যায়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন টাঙ্গাইল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। আট মিটার প্রস্ত ও ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন কোটি ৬০ লাখ টাকা।