সারা বাংলা

ধান সিদ্ধ-শুকানোয় ব্যস্ত তারা

চলতি আমন মৌসুমে দিনাজপুর জেলার ১৩ উপজেলার ২ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে হয়েছে ধানের চাষাবাদ। ধান কাটা ইতোমধ্যে শেষ করেছেন কৃষকরা। এখন সেই ধান রাত জেগে সিদ্ধ করে সকাল থেকে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। রাত-দিন পরিশ্রম করেও যেন ক্লান্তি নেই তাদের। নিজ ক্ষেতের ধান ঘরে তোলার আনন্দে ভাসছেন তারা। 

শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার চোরগাছা গ্রামের একটি স্কুল মাঠে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের কৃষকরা পুরো মাঠে ধান শুকানোর জন্য নিজ নিজ নেটজাল বিছিয়ে রেখেছেন। বাড়ি থেকে সিদ্ধ করা ধান বস্তায় করে মাঠে বিছানো নেটজালের উপর ঢালছেন তারা। আর কৃষাণীরা সে ধান পা দিয়ে নেটজালে আলগা করে দিচ্ছেন। শীতের মিষ্টি রোদে বারবার ধানে পা দিচ্ছেন কৃষাণীরা। যত বেশি ধানে পা দিবেন ততই তাড়াতাড়ি শুকাবে ধান। 

কৃষাণীদের কাজের গতি দেখে মনে হয় কোনো ক্লান্তি নেই তাদের। কেন না আগামী ইরি মৌসুম পর্যন্ত ঘরের চাল করে নিতে হবে তাদের।

কৃষণী সাবিনা ইয়াসমিন ও সাজেদা বেগম রাইজিংবিডিকে বলেন, আমন ধান কাটা-মাড়াই হয়ে গেছে। ধান বিক্রি করা হয়েছে। ছয় মাসের জন্য ঘরের চাল তৈরি করতে হবে। তাই ভোররাতে ধান সিদ্ধ করেছি। সিদ্ধ ধান এই মাঠে শুকাচ্ছি।

শাহিদা বেগম নামের অপর এক কৃষাণী বলেন, ‘এবার আমার স্বামী জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। এবছর ফলন ভালো হয়েছে। জমির ধান কাটা মাড়াই শেষ করেছি। সারা রাত জেগে আমরা দু’জনে মিলে ধান সিদ্ধ করেছি। সকালে বস্তায় করে দুইজন মিলে এই স্কুল মাঠে নিয়ে এসেছি। মাঠে নেট বিছিয়ে শুকাতে দিয়েছি। আকাশের অবস্থা ভালো আছে, সারাদিনে সব ধান শুকিয়ে যাবে। পরে মিলে ধান ভাঙাবো, আগামী ইরি মৌসুম পর্যন্ত আমাদের আর কোন চিন্তা নাই।’

আতিকুর রহমান ও রশিদুল নামের দুই কৃষক বলেন, আমন ধানের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। বাজারে ধানের দামও ভালো পাইছি। বাড়ির খাওয়ার জন্য ধান সিদ্ধ-শুকান করা হচ্ছে। আগামী ইরি মৌসুম পর্যন্ত এই ধানের চালেই আমাদের সংসার চলবে।

হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, ‘দিনাজপুর জেলায় ২ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। হাকিমপুর উপজেলায় ৮ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। ধান কাটা-মাড়াই প্রায় শেষের দিকে। ফলনও ভালো। যতোদূর জানি ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষকেরা।’