সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, পরিস্থিতি কিছুক্ষণের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। এদিকে সংঘর্ষের জন্য উভয়পক্ষ একে অন্যকে দায়ী করছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সম্মেলন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
সংঘর্ষ চলাকালে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সম্মেলন স্থগিতের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এমাদুল হোসেন।
সূত্র আরো জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমান কমিটির সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এমাদুল হোসেন এর নেতৃত্বে একটি গ্রুপ ও সহ-সভাপতি শরীফ হোসাইন, সাব্বির মোল্লা, যুগ্ম সম্পাদক প্রান্ত ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসাইন, আকাশ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে একটি গ্রুপ রয়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ছাত্রলীগের কর্মীসভার আহ্বান করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান ও সেক্রেটারি এমাদুল হোসেন।
ওই সভায় উপস্থিত হন সহ-সভাপতি শরীফ হোসাইন, সাব্বির মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান হোসাইন, আকাশ ভূঁইয়ার নেতৃত্বে বিদ্রোহী গ্রুপ। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত ইসলাম বলেন, ‘সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কোনো সভা না করে, কমিটির অন্যদের না জানিয়ে অগণতান্ত্রিকভাবে বিভিন্ন অনুষদ ও ডিপার্টমেন্ট কমিটি দিতে কর্মীসভার আহ্বান করেছিলেন। খবর পেয়ে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তা পণ্ড করে দিয়েছে।’
অপরদিকে সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রলীগকে গতিশীল করার লক্ষ্যে কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের কর্মীসভা আহ্বান করা হয়েছিল। প্রতিপক্ষ বহিরাগতদের নিয়ে হামলা চালিয়ে তা পণ্ড করে দিয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আপাতত কর্মীসভা স্থগিত করা হয়েছে। উভয়পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের ওসমানী হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।’
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মনিরুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের নিবৃত করার চেষ্টা চলছে। কিছুক্ষণের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’