রাজশাহীর তাপমাত্রা আরও কমেছে। রোববার (৮ জানুয়ারি) ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
এর আগের দিন শনিবার ভোরে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয়েছিল ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেদিন এটিও ছিল মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শনিবার সর্বোচ্চ তাপপাত্রা উঠেছিল ১৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর রাতেই তাপমাত্রা কমে যায়।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিস থেকে জানা গেছে, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যাওয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গত ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। এরপর তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির ওপরে উঠেছিল। কিন্তু শনিবার থেকে তা আবারও ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেছে।
এদিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে রাজশাহীতে এখন কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বইছে হিমেল হাওয়া। শীতের দাপট বেড়ে যাওয়ায় ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানে নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। পথের ধারে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে অনেকেই।
রোববার সকাল ৭টার দিকে রাজশাহীর নগর ভবনের সামনে বসেছিলেন কয়েকজন নারী। এদের একজন ছোটবনগ্রামের আনোয়ারা বেগম। তিনি জানান, সকাল ৯টার দিকে এখানে খাদ্য অধিদপ্তরের চাল বিক্রির ট্রাক আসবে। কম দরে চাল কিনতে দুই ঘণ্টা আগেই লাইনে বসেছি আমরা।
আনোয়ারা বলেন, ‘এবার মুনে হোছে অন্য বচ্ছরের চাইতে বেশি জাড় লাগছে। জাড়ে হাত-পা জড়ো হবার যোগাড়। তাও কমদরে চাল কিনার লাইগা সূর্য উঠার আগিই আইসছি। গরিব মানুষ, তাছাড়া তো উপায় নাই।’
সাদরুল ইসলাম নামের এক রিকশা চালক বলেন, ‘কনকন্যা ঠান্ডা। বাতাস লাগলে তো হাত অবশ হয়ে যাছে। কিন্তু হাত বাহির করে রিকশার হ্যান্ডেল ধরতিই হবে। তা না হলে সংসার চলবে না। হাতে বাতাস না লাগাতে হ্যান্ডেলে পলিথিন দিয়েছি। তাহিলে বাতাসটা হাতে সরাসরি লাগে না।’
দড়িখড়বোনা এলাকায় একটি খাবারের হোটেলে কাজ করেন বিপ্লব হোসেন। তিনি বলেন, ‘এই ঠান্ডায় পানি ছুতে খুব কষ্ট। তাও করতিই হচ্ছে। পানি লিয়্যাই আমাদের কাজ। শীতের এই কয়ডা মাস খুব খারাপ অবস্থা। গরমের দিন না আসা পর্যন্ত শান্তি নাই।’
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন জানান, গত কয়েকদিন রাজশাহীতে ঘন কুয়াশা পড়েছিল। কুয়াশা কেটে যাওয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচেই থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।’