চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত দুইদিন ধরে কনকনে শীতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। কনকনে শীত আর হিমেল হাওয়ার দাপটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তীব্র শীতের কারণে সকাল সকাল মানুষ বাজারমুখী না হওয়ায় দোকানপাট খুলছে দেরিতে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় গত ৭২ ঘণ্টায় সর্বশেষ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভোর বেলায় কুয়াশার দাপট থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে সূর্য। ক্ষণে ক্ষণে বাড়ছে সুর্যের তাপও।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মহাসড়কে কুয়াশার দাপটে হেডলাইট জ্বালিয়ে যান চলাচল করছে। নিম্ন আয়ের মানুষরা পেটের দায়ে কনকনে শীতেও কর্মস্থলে যাচ্ছেন। অনেকে শীতের কাপড় চোপড় পরে নিজ কর্মস্থলে ফিরলেও কিছু কিছু মানুষের গায়ে গরম কাপড়ের দেখা মেলেনি। তারা জীর্ণশীর্ণ কাপড় পরে শীতে কাহিল হয়ে নিজ কর্মস্থলে ফিরেছেন।
আশরাফুল নামের এক ভটভটি চালক বলেন, সপ্তাহ ধরে হিমেল হাওয়ার কারণে সারাদিনই ঠাণ্ডা অনুভূত হতো। গত দু-দিন ধরে ভোর থেকে বেলা না বাড়ার আগ পর্যন্ত কনকনে ঠাণ্ডা। এই ঠাণ্ডায় চলা ফেরা করতে খুব কষ্ট হয়। তাছাড়া কুয়াশার কারণে রাস্তাঘাটে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। চলন্ত গাড়িতে বাতাস বেশি লাগায় হাত-পাও কাঁপছে।'
রফিকুল ইসলাম নামের এক রিকশাচালক বলেন, বরাবরের মতোই যথাসময়ে রিকশা নিয়ে সকাল সকাল বাড়ি থেকে বের হই। কিন্তু শীতের কারণে মানুষও সকাল সকাল বের হয় না। যারা বের হয় তারা অধিকাংশ দিনমজুর, পেটের দায়ে কনকনে শীতে বের হওয়া ছাড়া তাদের উপায় নাই। এছাড়াও সকালে কিছু ছাত্র-ছাত্রী প্রাইভেট পড়তে আসে। তাদের অনেকেরই বাবা নিজস্ব গাড়ি দিয়ে রেখে যায়। এই রকম অবস্থা অন্তত ১৫-২০ দিন থেকে চলছে।
রিফাত নামের এক দমশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, গত দুই-তিন থেকে সকাল বেলায় বেশ ভালোই কুয়াশা পড়েছে। সকালে প্রাইভেটে আসার সময় সাইকেল নিয়ে আসি, এতে হাত পায়ে চরম ঠাণ্ডা লাগে। সকাল সকাল প্রাইভেট হওয়ার কারণে আমাদের অনেক সহপাঠীর ঠাণ্ডাজনিত রোগবালাই হচ্ছে।
সাইফুল্লাহ নামের এক মুদি দোকানি বলেন, আজ সকালে ঢাকা থেকে কিছু মালসামানা আসবে তাই একটু সকাল সকাল দোকান খুলেছি, কিন্তু কোন বেচাবিক্রি নাই। কারণ ছাড়া সকাল সকাল মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না।
এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিনই ঠাণ্ডাজনিত রোগী ভর্তি হচ্ছে। জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাসুদ পারভেজ বলেন, রোটা ভাইরাসের কারণে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই।’
শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান বলেন, ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন জায়গায় অন্ততপক্ষে ২৪ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।