বগুড়া-৬ (সদর) এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপ নির্বাচনের আয়োজনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। সব ঠিক থাকলে আগামীকাল এই দুই আসনে ভোটগ্রহণ হওয়া কথা রয়েছে।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বগুড়ার দুই আসনে ভোটগ্রহণ চলবে।
বগুড়ার দুই আসনে মোট ২০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে বগুড়া-৬ আসনে ১১ জন এবং বগুড়া-৪ আসনে ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানা গেছে, বগুড়ার দুই আসনের ২৫৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে বগুড়া-৬ আসনের ১৪৩টি কেন্দ্রের ১ হাজার ১৭টি কক্ষে এবং বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের ১১২টি কেন্দ্রের ৭৭৭টি কক্ষে ভোটগ্রহণ হবে। বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। এ আসনে ১৪৩ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ১৭ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২ হাজার ৩৪ জন পোলিং অফিসার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।
অন্যদিকে, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯। এই আসনে মোট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন ১১২ জন। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৭ এবং ১ হাজার ৫৫৪ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।
বগুড়া পুলিশের গোয়েন্দা শাখা সূত্রে জানা গেছে, দুই আসনের ২৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৮ টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ (অধিক গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে বগুড়া-৬ সদর আসনে মোট ১৪৩টির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৯টি। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনেও মোট ১১২টির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৭৯টি।
দুই আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বগুড়া-৪-এর কাহালু উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলো। ওই উপজেলায় ৬৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া এই আসনের নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বগুড়া-৬ সদর আসনে ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ কেন্দ্র ৬৪টি। বাকি ৭৯টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।
বগুড়া-৬ (সদর) আসনে নৌকা নিয়ে লড়ছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর, স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ, হিরো আলমসহ ১১ প্রার্থী আসনটিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মহাজোটের শরিক দল জাসদ নেতা রেজাউল করিম তানসেন মশাল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির ফারুক, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আলোচিত হিরো আলম, কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল, মোশফিকুর রহমান কাজলসহ ৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এদিকে বগুড়া প্রশাসন সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, দুই আসনের উপ নির্বাচনে ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটে ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি মোতায়ন থাকবে ১৬ প্লাটুন বিজিবি। এছাড়াও ভোটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাড়ে ৪ হাজার নিরাপত্তা কর্মী কাজ করবেন। প্রতি ভোটকেন্দ্রে গুরুত্ব বিবেচনায় নিরাপত্তার জন্য ৩ জন পুলিশ সদস্য ছাড়াও এপিবিএন, আনসার ভিডিপিসহ ১৭ নিরাপত্তকর্মী কাজ করবেন। ভোটকেন্দ্রের বাইরে ও নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের স্ট্রাকিং ফোর্স ও বিজিবি সদস্যরা টহল দেবেন।
বগুড়া জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ আছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সুযোগ নেই। ভোটারদের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেশি ভোটার যে কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় সংসদ থেকে বিএনপির সাত সংসদ সদস্য একযোগে পদত্যাগ করেন। এর ফলে আসনগুলো শূন্য হয়। পরে নির্বাচন কমিশন আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারন করে।