এসএসসি পাশের ২৬ বছর পর ৪৮ বছর বয়সে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করে চমকে দিয়েছেন চাঁদপুর পৌর শহরের খালিশাঢুলী এলাকার মো. শাহ আলম বেপারী। এ বয়সে তার এ কৃতিত্বে খুশি পরিবার, স্বজন, সহকর্মী ও এলাকাবাসী।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন শাহ আলম বেপারী। শিক্ষার যে কোনো বয়স নেই, তা সবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তিনি।
মো. শাহ আলম বেপারী চাঁদপুর পৌর খালিশাঢুলী এলাকার আব্দুল করিম বেপারীর ছেলে। তিনি ১৯৯৬ সালে বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি কাজের খোঁজে ঢাকায় চলে যান। নিজের কর্মজীবনের এক পর্যায়ে তিনি বুঝতে পারেন শিক্ষাই আসল। নিজের ইচ্ছাশক্তি আর সহকর্মীদের উৎসাহে ভর্তি হন উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আলহাজ মকবুল হোসেন কলেজ এবং ঢাকার সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে। পড়াশোনার এক পর্যায়ে ২০২৩ সালের এইচএসসি ফলাফলে তিনি উভয় প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ হন। সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে ২.৭৫ গ্রেড ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৩.০০ পান।
এদিকে একই শিক্ষাবর্ষে চাঁদপুরের বাবুরহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে তারই পুত্রবধূ সালমা আক্তারও এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এইচএসসিতে একই সঙ্গে শ্বশুর ও পুত্রবধূর সাফল্যে আনন্দে ভাসছে শাহ আলম বেপারীর পরিবার।
শাহ আলম বেপারী ব্যাক্তি জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জনক। ছেলে প্রবাসী ও মেয়ে ঢাকার একটি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরত। আর তিনি ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির একজন সিনিয়র অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত।
মো. শাহ আলম বেপারী বলেন, ১৯৯৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে কর্মজীবনে জড়িয়ে পড়ি। মানুষের জীবনে যে শিক্ষা অতি গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে পেরেছি। তাই আমার ইচ্ছাশক্তি আর সহকর্মীদের উৎসাহে এসএসসি পাশের দীর্ঘ ২৪ বছর পর কলেজে ভর্তি হয়ে ২৬ বছর পর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হই। একই শিক্ষাবর্ষে আমার পুত্রবধূও এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জন করেছে। এর জন্য আমার পরিবার অত্যন্ত খুশী। এ অর্জনটা আমার পেশাগত জীবনে অনেক কাজে লাগবে। এই অর্জনের জন্য মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।