নোয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা সুবর্ণচরে এবার অন্যান্য বারের তুলনায় সরিষার আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। সরিষা ক্ষেতে ইতোমধ্যে বীজও আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন চাষিরা।
এবার কৃষি অফিসের সহযোগীতা নিয়ে সুবর্ণচর উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ৩৪০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন কৃষকরা। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের দৃশ্য দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় যে কারোর।
উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের কৃষক মো. এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে নতুন জাতের বীজ ও সার এবং নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে ঝুঁকি নিয়ে ৫০ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। গাছে ভালো ফলন দেখা গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো লাভ হওয়ায় স্বপ্ন দেখছি। এবার লাভ হলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে সরিষার আবাদ করবো ইনশাল্লাহ।’
চর জব্বরের কৃষক মো. সিরাজ মিয়া বলেন, ‘অন্যের জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করি। এবার ধান তোলার পর কৃষি অফিসের কথায় ও সহযোগীতায় প্রায় পাঁচ একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। ফলন ভালোই দেখা যাচ্ছে। বাজারে ভালো দাম পেলে আগামীতেও আরও বেশি জমিতে সরিষার চাষ করবো।’
চর জুবলির কৃষক মো. সোলায়মান বলেন, ‘আমরা কৃষক পরিবারের সন্তান। কৃষি কাজ করেই আমাদের বাবা-দাদারা চলেছেন, আমরাও চলছি। নিজেদের জমি না থাকায় অন্যদের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি। এবার কৃষি অফিস সরিষা চাষ করতে অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তাদের সহযোগীতায় ও পরামর্শে সরিষার আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এখন বাজারে কেমন দাম পাই, সেটার ওপর নির্ভর করছে আগামীতে চাষ করবো কিনা?’
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, গত বছর সুবর্ণচরের চরক্লার্ক ব্লকে মাত্র ১ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়। কিন্তু ভালো ফলন ও বেশি লাভ হওয়ায় চলতি বছর এই ব্লকের ৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছেন চাষিরা। তবে সঠিক সময়ে বীজ রোপণ করায় বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।’
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হারুন অর রশিদ জানান, ‘সুবর্ণচর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে এবার মোট ৩৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন চাষিরা। আশা করি এবার লাভের মুখ দেখবে কৃষকরা। কৃষকদের যে কোনো সমস্যা ও প্রয়োজনে উপজেলা কৃষি বিভাগ তাদের পাশে রয়েছে। কৃষকরা যাতে আগামীতে আরো বেশি করে সরিষার আবাদ করতে পারেন তার জন্য আমরা সহযোগীতা দিয়ে যাবো।’