গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে মশার উপদ্রব। দিনে রাতে সমানে কামড়াচ্ছে এই প্রাণীটি। এমনকি এই প্রাণীর হাত থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে তাই নগরবাসীকে দিনের বেলাতেও বাড়ির ভেতর টাঙিয়ে রাখতে হচ্ছে মশারি।
নগরবাসীর অভিযোগ, ড্রেন ও জলাশয়গুলোতে জমে থাকা ময়লা আবর্জনা সঠিক সময়ে পরিষ্কার না করা এবং সিটি করপোরেশন কর্তৃক মশা নিধনে পর্যাপ্ত ওষুধ স্প্রে না করার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে পঁচা আর্বজনায় ভরপুর ও ছোট-বড় অসংখ্য নালা ও নর্দমা। এইসব নালায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির নোংরা পানি জমা থাকে সবসময়। এসব ড্রেনেজ ব্যবস্থা দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেখান জন্ম হচ্ছে মশার। এছাড়াও সিটি করপোরেশন এলাকার যেখানে সেখানে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। বিভিন্ন বাসাবাড়ির সামনেও পড়ে থাকে বর্জ্য। আর জমে থাকা এসব বর্জ্য থেকেও মশার বিস্তার আর উৎপাত হচ্ছে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগরবাসী।
মশারি টাঙিয়ে, কয়েল জ্বালিয়ে, ইলেক্ট্রিক ব্যাট কিংবা মশানাশক ওষুধ স্প্রে করেও সুফল পাচ্ছেন না নগরবাসী। সকালে মশার উপদ্রব একটু কম থাকলেও বিকেলে নিদিষ্ট স্থানে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার উপায় থাকেনা কারো।
জয়দেবপুর মধ্যে ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা হৃদয় হাসান বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার মশার উপদ্রব সবচেয়ে বেশি। সন্ধ্যার পর পড়ার টেবিলে বসে থাকা যায় না। এমনকি মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও মশায় কামড়ায়। সত্যি বলতে মশার কামড়ে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানো হলে হয়তো কিছুটা মুক্তি পাওয়া যেতো।
পশ্চিম বিলাশপুর এলাকার তাহের মিয়া বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নেই পযাপ্ত নালা, নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার স্থান। যে যেখানে পারছেন সেখানেই বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা আবর্জনা ফেলছেন। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এসব স্থানের জমে থাকা পানি থেকে জন্ম নিচ্ছে মশা। অনেকেই দিনের বেলাতেও ঘরে মশারি টাঙিয়ে রাখছেন। বিকেলে বন্ধুদের নিয়ে মাঠে আড্ডা দিতে গেলেও মশার কামড়ে বসে থাকা যায় না। যে পরিমাণ মশা বেড়েছে এটি না কমলে অচিরেই নগরীর মানুষ ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
গাজীপুরা এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব সিকদার বলেন, গত বছর এবারের থেকে মশার পরিমাণ অনেকটাই কম ছিল। গত বছর সিটি করপোরেশন থেকে ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হয়েছিলো। কিন্তু এ বছর এখনো এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। নগরীর মানুষের জন্য কর্মকর্তাদের মনে হচ্ছে কোনো মাথাব্যথা নেই।
সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, মশা প্রতিরোধের জন্য গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৮টি অঞ্চলে ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছে। ওইসব অঞ্চল থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে ওয়ার্ড কাউন্সিলরা নিজেদের এলাকার মশা নিধনের কাজে ব্যবহার করছেন। সঠিকভাবে নিধন করতে হলে একযোগে মশার ওষুধ ছিটানোর কাজ করতে হবে। তবে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে একাজে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে।