শুরু হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। সারা দিন পানাহারে বিরত থেকে সিয়াম সাধনার পর ইফতারে খেজুর মুখে দেন প্রায় সব মুসল্লি। রোজাদাররা মনে করেন এই ফল দিয়েই ইফতার করতেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। কাজেই ইফতারে ফলটি মুখে দেওয়া সুন্নত। সে কারণেই রমজান মাসে বাংলাদেশে খেজুরের চাহিদা অনেক বেড়ে যায়।
রমজান মাস উপলক্ষে দেশে প্রতিবছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণ খেজুর আমদানি করা হয়ে থাকে। এবছরও তার ব্যতিক্রময় হয়নি। তবে দামটা অনন্য বারের থেকে অনেক বেশি। বিক্রেতাদের দাবি, আমরা যেভাবে কিনেছি বিক্রি করছি ঠিক সেই হিসাবেই।
গাজীপুরের বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রমজান উপলক্ষে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে জিহাদি খেজুর। বাজারে এই খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। এছাড়াও এই বাজারে ‘কালাস’ খেজুর ১ কেজি ২৫০ টাকা , ‘জাপান’ খেজুর ১ কেজি ৩৫০টাকা , ‘পাতা’ খেজুর ১ কেজি ৪৫০ টাকা, ‘বরই’ খেজুর ১ কেজি ৪৫০ টাকা, ‘আজোয়া’ খেজুর ১ কেজি ১১০০ টাকা, ‘মাবরুম’ খেজুর ১ কেজি ১২০০ টাকা, ‘কালমি’ খেজুর ১ কেজি ৭০০ টাকা, ‘সুক্কারী’ খেজুর ১ কেজি ৫৫০ টাকা, ‘সুগাই’ খেজুর ১ কেজি ৬০০ টাকা, ‘রাবেয়া’ খেজুর ১ কেজি ৫০০ টাকা, ‘মজদুল’ খেজুর ১ কেজি ৬০০ টাকা, ‘তিউনিশিয়া’ খেজুর ১ কেজি ৪০০ টাকা, ‘মরিয়ম’ খেজুর ১ কেজি ৭০০ টাকা, ‘মেডজুল’ খেজুর ১ কেজি ৮৫০ টাকা, ‘আম্বার’ খেজুর ১ কেজি ৫৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গাজীপুর যেহেতু শিল্পঅধ্যুষিত জেলা। এখানাকার অধিকাংশ মানুষ বিভিন্ন শিল্পকারখানায় কাজ করেন। তাদের আয় স্বল্প। যার কারণে এসব খেটে খাওয়া মানুষ আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল রেখে খরচ করেন।
গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক জুলেখা খাতুন বলেন, ‘সারাদিন রোজা থাকি। ইফতারের সময় ২টা খেজুর আর পানি খাই। এরপর নামাজ পরে ভাত খাই। আমাদের ইফতারের সামগ্রী বলতে দুটো খেজুরই। কিন্তু এবার এই খেজুরের অনেক দাম। মন তো চায় ভালো খেজুর কিনতে কিন্তু টাকায় কুলায় না। তাই জিহাদি খেজুর কিনেছি।’
টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিক আলাউদ্দিন বলেন, বাজরে এসে শুধু দাম শুনে যাচ্ছি। বাজরে লেবু, বেগুন, শসা সবকিছুর দাম বেশি । একটু ভালো মানের এক কেজি খেজুর কিনতে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা লাগে। তাহলে যাদের বেতনই অল্প তারা কিভাবে কিনবে। বাধ্য হয়ে জিহাদি খেজুর নিচ্ছে।
খেজুর ব্যবসায়ী মামুন বলেন, এবার খেজুরের দাম বেশি। আমাদের কিছু করার নেই। যেহেতু বেশি দামে কিনতে হয়েছে তাই বেচতেও হচ্ছে বেশি দামে।
তিনি আরও বলেন, বাজারে সব দামের খেজুরের ক্রেতাই আছে। তবে জিহাদি খেজুর বিক্রি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।