সারা বাংলা

মাগুরায় গ্রাহকদের টাকা নিয়ে উধাও এনজিও

সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মাগুরায় সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) প্রতারণার মাধ্যমে দরিদ্র্য গ্রাহকদের টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংস্থার দুই কর্মকর্তা এক হাজার গ্রাহকের প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

মঙ্গলবার (১৩ জুন) সকালে সরেজিনে মহম্মদপুর সদরের কানাইনগর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত নারীরা এসইউএস-এর কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কথা হলে তারা প্রতারিত হয়েছেন বলে জানান। 

ভুক্তভোগী মহম্মদপুর সদরের বসুরধুলজুড়ি গ্রামের তাহমিনা, জান্নাতি, চরপাচুড়িয়া গ্রামের ফুলমতি ও অন্তরা বেগম বলেন, দুই মাসের বেশি সময় আগে তাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে গিয়ে নারীদের নিয়ে সমিতি গঠন করে এনজিওটির দুই কর্মকর্তা। সমিতির প্রতিটি নারী সদস্যকে দুই বছর মেয়াদে কম সুদ ও সহজ শর্তে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। ঋণের বিপরীতে সঞ্চয় হিসেবে ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন নারীরা। আজ (মঙ্গলবার) সকালে ঋণের টাকা নেওয়ার জন্য তাদেরকে সদরের কার্যালয়ে আসতে বলেন এনজিওর কর্মকর্তারা। কার্যালয়ে এসে গ্রামের নারীরা  দেখতে পান অফিস তালাবদ্ধ। এমনকি কর্মকর্তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরও বন্ধ। 

বাড়ির মালিক স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক গাজী কামাল এনজিও কর্মীদের অবস্থান সম্পর্কে কিছু জানাতে পারেননি। তবে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন দুই কর্মকর্তার একজনের নাম ছিল রানা। তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন নম্বর (পটুয়াখালী হ-১১-১৫০৬) এবং মোবাইল নম্বর ০১৮৭১৮১৮৫০৭ বলেও জানিয়েছেন তারা। 

বাড়ির মালিক গাজী কামাল জানান, কয়েকদিন আগে দুই জন তার বাড়ি ভাড়া নিয়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে চলে যান। কাগজপত্র দেখিয়ে চুক্তি করার কথা বলা হলেও তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্য চরপাচুড়িয়া গ্রামের ওবাদুল্লাহ মোল্যা, জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, তাদের স্ত্রী ছাগল বিক্রি করে ঋনের আশায় ১০ হাজার টাকা করে জমা দেন এনজিওতে। সদরের ব্রাক অফিসের পেছনে সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (এসইউএস) প্রধান কার্যালয় গড়ে তোলেন প্রতারকরা। সেই কার্যালয় থেকে তাঁরা এলাকার মানুষদের অধিক লাভ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকদের বিনিয়োগ করাতে থাকেন। প্রায় এক হাজার গ্রাহক তাঁদের অর্থ ওই এনজিওতে জমা করেন। অনেকে অধিক সুদের আসায় টাকা জমা করেন। টাকা হারিয়ে দরিদ্র এসব গ্রাহক পথে বসে গেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (এসইউএস) কথিত চেয়ারম্যান রানার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রামানন্দ পাল জানান, সমাজ উন্নয়ন সংস্থা (এসইউএস) নামের কোনো এনজিওর নাম তাদের তালিকায় নেই। তাঁদের কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। তারপরও এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।