যাকাত স্বাবলম্বী প্রকল্পের আওতায় বিধবা নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় অর্ধশতাধিক বিধবা নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করেছে মাস্তুল ফাউন্ডেশন।
গত সোমবার (১৯ জুন) কুড়িগ্রাম জেলায় নাগেশ্বরী উপজেলা পৌরসভায় বিদ্যুৎপাড়া গ্রামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেলাই মেশিন বিধবা নারীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে অসহায় এই নারীদের মাঝে সেলাই মেশিন বিতরণ করেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা জাহান এবং অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
এসময় কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, আমরা সরকারের সহায়তায় কুড়িগ্রাম উন্নয়নে কাজ করছি। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের যাকাত স্বাবলম্বী প্রকল্পের অর্থায়নে বিধবা ও অসহায় নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। উদ্যোগটি সমাজের দারিদ্র্য বিমোচন এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, আমরা যাকাত স্বাবলম্বী প্রকল্পের আওতায় দাতাদের দেওয়া যাকাত ফান্ডের সঠিক বণ্টনের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করি। ইনশাআল্লাহ আমরা ভবিষ্যতে সরকারের সহায়তা পাবার আশা রাখছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ফারজানা জাহান বলেন, নারীদের স্বাবলম্বী করার মধ্য দিয়ে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের যাকাত স্বাবলম্বী প্রকল্পের অর্থায়নে এ সকল বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগটি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমরা মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এই উদ্যোগে পাশে আছি।
উল্লেখ্য, মাস্তুল ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত দাতব্য প্রতিষ্ঠান। মাস্তুলের রয়েছে নিজস্ব স্কুল, মাদ্রাসা এবং শেল্টার হোম যেখানে আবাসিক/অনাবাসিক মিলে অর্ধশত পিতামাতাহীন/অনাথ/এতিম শিশু রয়েছে। এর বাইরে ২২টি স্কুলে, ১২ জেলায় ১১০০ সুবিধাবঞ্চিত গরিব শিক্ষার্থীদের সকল শিক্ষার উপকরণ দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পুষ্টিকর খাবার, শিশু অধিকার, মৌলিক চাহিদা নিশ্চয়তা করা হচ্ছে। রয়েছে সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র যার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কর্মক্ষম করে তোলা হচ্ছে। যাকাত স্বাবলম্বী প্রজেক্টের মাধ্যমে ৮০০ জনকে স্বাবলম্বী করে তোলা হয়েছে। রয়েছে দাফন-কাফন সেবা, যার মাধ্যমে করোনার শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের অধিক লাশ দাফন হয়েছে। রয়েছে মেহমানখানা, যেখান থেকে প্রতিদিন শতাধিক অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের একবেলা পেট পুড়ে খাওয়ার জন্য ছুটে আসে।