রাজশাহীতে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলা দায়েরের ১৪ বছর পর পলাতক এ দুই আসামিকেক শুক্রবার (২৩ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার কালুহাটি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই জনের বাড়িতে ফেরার খবর পেয়ে চারঘাট থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন- মফিজ উদ্দিন (৭৫) ও খেতাব (৮০)। শনিবার (২৪ জুন) বিকাল ৪টায় নিজের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান রাজশাহীর পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন। তিনি জানান, দুইজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে আগেই। মামলা বিচারাধীন। পলাতক থাকায় তাদের এতদিন গ্রেপ্তার করা যায়নি।
মামলা হওয়ায় আসামিরা আদালতে গিয়ে জামিনও নেননি। খেতাব পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এসপি জানান, ২০০৯ সালের ৯ এপ্রিল কালুহাটি গ্রামের গোলাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি মফিজ উদ্দিন ও খেতাবসহ ছয়জনের নামে মামলা করেন। গোলাম হোসেন অভিযোগ করেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বাবা রওশন আলী সরকারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তখন পাকিস্তানি বাহিনীর সহায়তাকারী হিসেবে ছিলেন মামলার ছয় আসামি। শহীদ রওশন আলী সরকারকে নির্যাতনের পর বিবস্ত্র অবস্থায় গাড়ির পেছনে বেঁধে টানা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়। ওই মামলা হওয়ার পর আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরমধ্যে মামলার ২ নম্বর আসামি সিদ্দিকুর রহমান, ৪ নম্বর আসামি খবির আলী ও ৫ নম্বর আসামি চয়েন উদ্দিন মারা যান। মামলার ১ নম্বর আসামি মফিজ উদ্দিন ও ৩ নম্বর খেতাব দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর এলাকায় ফেরেন। খবর পেয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার ৬ নম্বর আসামি শাহিনুর রহমানও পলাতক আছেন। তার সম্পর্কে যাচাই-বাছাই চলছে।
এসপি আরও জানান, রওশন আলী সরকার মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি আওয়ামী লীগ করতেন। একই দিন আওয়ামী লীগ সমর্থক আরও অনেকের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গ্রেপ্তার মফিজ ও খেতাবের কোনো দলের পদ-পদবী নেই। তবে তারা এলাকায় ‘রাজাকার নেতা’ হিসেবে পরিচিত। দুজনকেই এলাকার লোকজন কুখ্যাত রাজাকার হিসেবে চেনে। মফিজকে শনিবারই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। আর খবির সুস্থ হওয়ার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।