বিবিরবাজার স্থলবন্দর। দীর্ঘ ২৮ বছরেও পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ব্যস্ত হয়ে উঠতে পারেনি বন্দরটি। তবে ধীরে ধীরে সিমেন্ট ও পাথরসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর রপ্তানির পরিধি বাড়লেও আমদানির পরিমাণ একেবারে সীমিত। দেশের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি না বাড়ায় ঝিমিয়ে আছে বন্দরটি। সেই সঙ্গে রাজস্ব আদায়েও পিছিয়ে পড়ছে। এ ছাড়া আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হলেও কুমিল্লার গোমতী নদী দিয়ে ভারতে বন্ধ রয়েছে নৌবাণিজ্যও।
বিবির বাজার স্থলবন্দর সূত্র জানা যায়, ১৯৯৫ সালে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি শুরু হয় এই স্থলবন্দর দিয়ে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তী হওয়ায় ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াতে বন্দরের সম্ভাবনা থাকলেও দীর্ঘ দিনেও আশানুরূপ রাজস্ব আদায় হয়নি এই বন্দর থেকে।
এ স্থল বন্দর নিয়ে পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করেন এমন বেশ কিছু ব্যবসায়ী জানান, চাহিদা অনুযায়ী ভারত থেকে পণ্য আমদানির অনুমোদন পাওয়া গেলে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাড়বে বাণিজ্য পরিধি।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, সিমেন্ট, কয়লা ও পাথরসহ ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৯৮ হাজার মেট্রিক টন পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এতে সরকারের কোষাগারে প্রায় সাড়ে ৭৬ কোটি টাকার রাজস্ব যুক্ত হয়। এর বিপরীতে ৪১ হাজার মেট্রিক টন গম ও বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী আমদানি হয় ভারত থেকে। আমদানিতে রাজস্ব মাত্র সাড়ে তিন কোটি টাকা।
এ স্থলবন্দর দিয়ে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে সিমেন্ট ও এলপিজি গ্যাসের রপ্তানি বেড়েছে। বিপরীতে আমদানির পরিমাণ মাইনাসে নেমেছে। গত চার মাসে আগরবাতি, ভূট্টা, গুড়া হলুদ ও জিরাসহ মাত্র দেড় কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। এর তুলনায় রপ্তানি হয়েছে প্রায় ৬৩ কোটি টাকার পণ্য।
মোশারফ হোসেন ও আবুল খায়েরসহ একাধিক গাড়ি চালক ও শ্রমিকরা জানান, বিবিরবাজার স্থলবন্দরে পণ্যের গাড়ি এসে দিনের পর দিন আটকে থাকতে হয় ছাড়পত্রের সমস্যার কারণে। এখানে থাকা, খাওয়া এবং পানি ও বাথরুমের সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় পড়ছেন নানা সংকটে। ভারতীয় বন্দরে গিয়ে নানান সময় হেনস্তা হওয়ারও অভিযোগ তাদের।
বিবির বাজার ল্যান্ড পোর্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাল বলেন, ভারত থেকে ৩৯টি পণ্য আমদানির অনুমোদন থাকলেও বাংলাদেশে সেগুলোর চাহিদা কম। পাশাপাশি ডলারের দাম বেড়ে যাওয়াকেও দায়ী করেছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে স্থল বাণিজ্যের বাইরে, ২০২০ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার গোমতী নদী দিয়ে দাউদকান্দি থেকে ভারতের সঙ্গে নৌবাণিজ্য শুরু হয়েছিল। তবে, গোমতী নদীর নাব্যতা সংকটে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়।