সারা বাংলা

রাঙামাটিতে টানা বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টিতে পাহাড় ধসের আশংকায় পাহাড়ের নিচে বসবাসরতদের নিরাপদে আশ্রয়ে যেতে এবং সতর্ক করতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন।

সোমবার (৭ আগস্ট) সকালে রাজস্থলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) শান্তনু কুমার দাশের কার্যালয়ে পাহাড় ধস, ভূমিধস, ভুমিকম্প ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়।

উপজেলার সদর, রাজস্থলী বাজার, হাজীপাড়া, নোয়াপাড়া, কুইক্যছড়িপাড়া, বড়ইতলা, গামারি বাগান, ওগাড়ি পাড়া, লংগদু, লংগদু পূনর্বাসনপাড়া, ইসলামপুর, গাইন্দ্যা পাড়া, শফিপুর, বাঙ্গালহালিয়া বাজার, ডাকবাংলা পাড়া, কাকড়াছড়ি পাড়া, ধলিয়া মুসলিম পাড়ায় মাইকিং করে মানুষের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হচ্ছে।

অন্য দিকে রাজস্থলী-চন্দ্রঘোনা প্রধান সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজস্থলী যেতে গামারি নামক এলাকায় পাহাড়ের মাটি ধসে রাস্তায় পড়ায় রোববার (৬ আগস্ট) বিকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। সড়ক জনপদ বিভাগের চেষ্টায় রাস্তা থেকে মাটি সরিয়ে যানবাহন চলাচল সচল করা হয়।

রাজস্থলী উপজেলার ঘিলাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবার্ট ত্রিপুরা বলেন, উপজেলার মধ্যে ঘিলাছড়ি ইউনিয়ন সবচেয়ে দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। পাড়ায় যাতায়াতের রাস্তার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং প্রচণ্ড বৃষ্টিতে হাজীপাড়া যাওয়ার বেইলি ব্রিজের উপর দিয়ে পানি চলাচল করছে।  সোমবার সকাল থেকে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।

গাইন্দ্যা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা বলেন, বেশ কিছু সমতল এলাকায পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাঁধ ভেঙে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা।

বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আদোমং মারমা জানান, কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বাঙ্গালহালিয়া বাজার, দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের পিছনের দিকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান।

রাজস্থলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) শান্তনু কুমার দাশ জানান, ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা ও পাহাড় ধস দেখা দেয়। পাহাড় ধসে প্রাণহানি হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করার মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি জানান, রাজস্থলী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবাচ মারমা বলেন, বর্তমান সরকার দুর্যোগ মোকাবিলায় নিরলসভাবে কাজ করছে। রাজস্থলী উপজেলায় কিছু কিছু ঝুঁকিপূর্ণ জায়গা রয়েছে। সেখানে বসবাসরত পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজ রাখতে।

বাঙ্গালহালিয়া বাজারের আশপাশে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি বছর এমন জলাবদ্ধতার সমস্যায় পড়তে হয় শত শত পরিবারের। বিশেষ করে বাঙ্গালহালিয়া ডাকবাংলা পাড়ায় দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের পিছনের দিকে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়।