স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া উপজেলায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। টানা দুই দিন ধরে পানিতে ডুবে রয়েছে পুরো সাতকানিয়া উপজেলা। আশ্রিত মানুষদের জন্য সংকট দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির। পুরো উপজেলা রয়েছে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। বন্ধ রয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক।
বুধবার (৯ আগস্ট) সাতকানিয়া উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ চিত্র। সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনও উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে কোমর সমান পানি।
কয়েকলাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বিভিন্ন স্কুল কলেজ এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন বহুতলভবনগুলোতে।
সাতকানিয়া চরতি ইউনিয়নের বাসিন্দা মোস্তফা কামাল রাইজিংবিডিকে বলেন, এখানকার বন্যাকবলিত মানুষ কতোটা ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে কেউ সামনে এসে না দেখলে বিশ্বাস করবে না। আমাদের এখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। বিশুদ্ধ খাবার পানিও নেই। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। বিদ্যুৎ না থাকায় দুর্ভোগ আরও চরম আকার ধারণ করেছে। তিনি চট্টগ্রামের সর্বমহলকে মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সাতকানিয়ায় ত্রাণ সহায়তা নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া সোস্যাল ইনফ্লুয়েন্সার অপু জানান, সাতকানিয়ার বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কিছু ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে দেখছি ভয়াবহ চিত্র। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি। তাদের অনেক খাদ্য সহায়তা দরকার। বিশুদ্ধ পানি দরকার। এখানে প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণ সহায়তা আসছে খুবই কম।
সাতকানিয়া- লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বরেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সাতকানিয়া লোহাগাড়াবাসীর জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী প্রেরণের আশ্বাস দিয়েছেন। যোগাযোগ করেছি সৌদি বাদশার অর্থায়নে পরিচালিত কিং সালমান সেন্টার, কুয়েতের একটি বড় দাতা সংস্থাসহ আরব আমিরাত, কাতার ও তুর্কি দাতা সংস্থাসমূহের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে। তারা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সহানুভূতি জানিয়ে আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করবেন। আশা করছি, খুব সহসাই তাদের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে যাবে।
নৌকায় ত্রাণ বিতরণ করতে যাওয়া আব্দুল মান্নান নামের এক তরুণ বলেন, আমরা সংসদ সদস্য নদভীর নির্দেশে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করছি। এখানে লাখ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত। কিন্ত ত্রাণ অপ্রতুল।
এদিকে, বুধবার সকাল থেকে সাতকানিয়া লোহাগাড়ায় সেনাবাহিনীর দেড় হাজার সদস্য উদ্ধার অভিযান এবং ত্রাণ বিতরণ শুরু করেছেন।