সারা বাংলা

কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

কুড়িগ্রামে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা থেকে নামতে শুরু করেছে তিস্তা নদীর পানি। মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ওই পয়েন্টে তিস্তার পানি ২৬ সেন্টিমিটার কমে এখনও বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে বৃষ্টি না থাকলেও উজানের ঢলে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি ধীর গতিতে বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। 

এদিকে, পানি বৃদ্ধির ফলে প্লাবিত হয়েছে কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলার নদ-নদী অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিচু এলাকা সমূহ। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে নিচু এলাকার রোপা আমন ও সবজির ক্ষেত। এসব এলাকার কাঁচা সড়ক তলিয়ে ভেঙে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভোগান্তি বেড়েছে মানুষজনের।

সদর উপজেলার পাচগাছী ইউনিয়নের জামাল উদ্দিন জানান, নদীর অববাহিকায় আমার বাড়ি। বাড়ির চারিদিকে পানি উঠেছে। পানি আর সামান্য বৃদ্ধি পেলে ঘরে প্রবেশ করবে। রাস্তা-ঘাট ডুবে গেছে। চলাচল করতে পারছি না।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার সদর উপজেলার যাত্রাপুর ও উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের নতুন জেগে ওঠা চরের বাসিন্দারা। ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগ নিয়ে বসবাস করছেন তারা। চরাঞ্চলগুলোর চারণভূমি তলিয়ে থাকায় দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট।

জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মুসার চরের বাসিন্দা আব্দুল্লা জানান, নতুন জেগে ওঠা চরের ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগ নিয়ে বসবাস করছেন তারা। বাড়ি ভিটা উঁচু না থাকায় সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলেই তা ঘর-বাড়িতে প্রবেশ করছে। খাবার রান্না করা নিয়ে বিপাকে পড়ছেন নারীরা। গবাদি পশু নিয়েও দুর্ভোগে রয়েছেন তারা।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিল্পব কুমার মোহন্ত জানান, জেলায় বৃষ্টি ও বন্যায় ৪৮৫ হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত ও ৫০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে আছে। তবে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে থাকা উঁচু এলাকার কিছু আমন ক্ষেত থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, সোমবার রাতে কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার নদীর পানি বিপদসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পর নামতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টার তথ্য অনুযায়ী বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে ৪২ সেন্টিমিটার, ধরলার সেতু পয়েন্টে ৪০ সেন্টিমিটার, দুধকুমারের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ছাড়া বাকি নদ-নদীর পানি আরও ৪৮ ঘন্টা বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি ওঠার পর নামতে শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।