স্থানীয় ওষুধ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও মারধরের ঘটনায় পুলিশ দুই ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের পর কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে আন্দোলনের চতুর্থ দিনে পরিষদের নেতারা এ ঘোষণা দেন। তবে বিকাল পর্যন্ত তিন দফা দাবিতে মেডিক্যাল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চলছিল।
ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের মেডিক্যাল কলেজ শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম অন্তর ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুজ্জোহা সজীব এক বিবৃতিতে বলেন, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের হামলায় জড়িত দুই জন গ্রেপ্তার হওয়া, সিটি মেয়র, সংসদ সদস্য, বিএমএ খুলনার নেতাদের আশ্বাসে জনভোগান্তি বিবেচনা করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মসূচি সাময়িক প্রত্যাহার করা হলো।
নেতারা একইভাবে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সমর্থন জানান। অবিলম্বে তাদের সব দাবি পূরণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। আন্দোলন প্রত্যাহারের পূর্বে হাসপাতাল-কলেজ কর্তৃপক্ষ, বিএমএ নেতাদের যৌথ বৈঠক হয়। নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমতাজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ভোররাতে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অভিযুক্ত বিল্লব মেডিসিন কর্নারের মালিক এস এম মাহমুদুর রহমান বিপ্লব (৩০) ও আবিদ ফার্মেসির কর্মচারী মীর বায়েজিদকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বুধবার রাতে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েলের নির্দেশের পর দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়। নেতারা দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত খুলনা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীদের দেখতে হাসপাতালে যান। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানান। তারা অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এমন ঘটনার আর যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেই জন্য সতর্ক থাকারও নির্দেশ দেন।
এর আগে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের সচিব মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০ জনের নামে মামলা করেন।
অপরদিকে ঘটনার প্রতিবাদে ওষুধ ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, হাসপাতাল এলাকায় দুটি মডেল ফার্মেসি স্থাপন, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ফাঁড়ি প্রদান এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খুমেক হাসপাতাল পরিচালক মো. রবিউল হাসান আগামী ২৩ আগস্টের মধ্যে দুটি মডেল ফার্মেসি স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি চিকিৎসক, শিক্ষার্থী ও রোগীদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতিও দেন।
সোমবার (১৪ আগস্ট) সন্ধ্যার দিকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বিপ্লব সহপাঠীদের নিয়ে মেডিসিন কর্নার নামে হাসপাতালের সামনে দোকানে ওষুধ কিনতে যান। সেখানে ওষুধের দাম নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা, সংঘর্ষ ও ভাঙচুর করা হয়। এতে উভয়পক্ষের ১৫-১৬ জন আহত হয়। খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।