সারা বাংলা

সাপনই আশ্রয়ণের জরাজীর্ণ ঘরে ৯০ পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন

দুস্থ ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের জন্য শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের গেরামারা গ্রামে সাপনই বিলের খাস জমির উপর ২০০০ সালে তৈরি করা হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প। সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে ২৫ একর খাস জমির উপর ১০০ ভূমিহীন পরিবারের জন্য ১০টি ব্যারাক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ঘর হস্তান্তরের আগে একটি ব্যারাক ঝড়ে উড়ে গেলে ঠাঁই  হয় ৯০ পরিবারের। কিন্তু দুই যুগ অতিবাহিত হওয়া, এর সঙ্গে অযত্ন আর অবহেলায় সব ঘর এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ঘরগুলো তৈরি করার পর আজ পর্যন্ত মেরামত করা হয়নি। যেগুলো টিকে আছে, সেগুলোতে একটু বৃষ্টি হলে ঘরে পানি পড়ে। বসবাসকারীরা মেরামতের দাবিতে নানাভাবে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও মিলেছে শুধু আশ্বাস। তবে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে।

বুধবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, ভরা বর্ষায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের চারপাশে থৈই থৈই করছে পানি। মনে হয় দ্বীপের মধ্যে বসবাস করছে অবহেলিত একদল মানুষ। বিলের মাঝখানে জরাজীর্ণ টিন ও কাঠের তৈরি আশ্রয়নের ঘরগুলো দাঁড়িয়ে আছে। প্রকল্পের প্রবেশমুখের একপাশে কোমর পানি, অপর রাস্তাটিও চলাচলের অযোগ্য। অনেকের ঘর ভেঙে যাওয়ায় বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে খুপরি করে রেখেছে। আবার কারও মেঝের মাটি বন্যার পানিতে চলে গেছে। ঘরের চাল ও বেড়া ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়ছে। ২০ বছর আগের দেওয়া টয়লেট ও টিউবয়েল ভেঙে যাওয়ায় খোলা জায়গায় ত্যাগ করছে মলমুত্র। এতে নিরাপদ স্বাস্থ্য নিশ্চিত হচ্ছে না শিশুসহ বৃদ্ধদের। মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।

দুস্থ পরিবারের সদস্যরা জানায়, এখানের অধিকাংশ মানুষ এতটাই গরিব যে তাদের ঠিকমতো খাবার জোটে না। তবে তাদের স্বাবলম্বী করতে প্রকল্পের ভিতরে প্রায় ২২ একরের একটি পুকুর দিয়েছে সরকার। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী ও সমবায় সমিতির নেতারা নামমাত্র মূল্যে বাইরের মানুষের কাছে পুকুরটি লিজ দিয়েছে। অথচ প্রকল্পের কর্মক্ষম মানুষ নিজেরা মাছ চাষ করলে বছরে প্রায় ২৫ লাখ টাকা মাছ বিক্রি সম্ভব ছিল।

এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার খৃষ্টফার হিমের রিসিল বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে তালিকা প্রণয়ন করে আবাসনের ঘর মেরামতসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা হবে।