সারা বাংলা

সাতক্ষীরা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

মিজানুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে, ঘোষিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছেন পদবঞ্চিতরা।

কেন্দ্র ঘোষিত নতুন কমিটির আহ্বায়ক মিজানুর রহমান সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

ঘোষিত কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন তিন জন। তারা হলেন- শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সম্পাদক স.ম আব্দুস সাত্তার, তালা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী নজরুল ইসলাম হিল্লোল ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর হোসেন সুজন। সুজন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বহিষ্কৃত যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নানের জামাই।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- মীর মহিতুল আলম, সরদার জাকির হোসেন, শেখ নাজিমুল ইসলাম, সৈয়দ মহিউদ্দীন হাসেমি তপু, সাইফুল ইসলাম, মনোয়ার হোসেন অণু, শেখ আব্দুস সালাম, জাহিদ হোসেন, রেজা আল আমিন শুভ, হাবিবুর রহমান সবুজ, অ্যাডভোকেট তামিম আহমেদ সোহাগ, রবিউল ইসলাম, মইনুল ইসলাম, সৈয়দ আমিনুর রহমান বাবু, রেজাউল ইসলাম রেজা, শেখ ইমরান হোসেন ও বশির আহমেদ।

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আব্দুল মান্নানকে আহ্বায়ক করে সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০২০ সালে বাঁকাল জেলে পাড়ায় জনৈক ব্যক্তির বাড়ি দখলের অভিযোগ ওঠে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। সেই থেকে সাতক্ষীরায় আন্দোলন-সংগ্রামে একেবারে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে দেশের বৃহত্তম এ যুব সংগঠনটি।

সংগঠন সূত্রে আরও জানা যায়, আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক হতে কেন্দ্রে লবিং করছিলেন কমপক্ষে ২০ জন সাবেক নেতা। তবে শুক্রবার যুবলীগের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল স্বাক্ষরিত কমিটিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে ক্ষুব্ধ অনেকেই।

পৌর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিনুজ্জামান তুহিন জানান, নতুন কমিটিতে যাদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তাদের সবার বাড়ি শহরের বাইরে। বর্তমানে তারা কিভাবে যুবলীগকে নেতৃত্ব দিয়ে বিরোধী দলের আন্দোলন মোকাবিলা করবেন তা নিয়ে সন্দেহ আছে। পরীক্ষিতদের ঠাই দেওয়া হয়নি কমিটিতে।

তিনি আরও বলেন, ঘোষিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে তারা অচিরেই সংবাদ সম্মেলনসহ কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা যুবলীগের একজন নেতা জানান, কমিটিতে যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকেই বিতর্কিত। আহবায়ক কমিটির সদস্য হয়েছেন এমন অনেক ব্যক্তি, যাদের সাংগঠনিক তৎপরতা একেবারে নেই। একজন তো বিভিন্ন জায়গায় ছবি তুলে বেড়ান। তাকে কখনো দল করতে দেখিনি। আরেকজন রয়েছেন যে কিনা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা বিভিন্ন কারণে খুবই বিতর্কিত।

সাতক্ষীরা পৌর যুবলীগের সভাপতি মনোয়ার হোসেন অণু জানান, বিরোধীদের মোকাবেলা করতে এখন দরকার যোগ্য ও শক্ত নেতৃত্ব। সাতক্ষীরা শহরের কোনো নেতাকে আহ্বায়ক অথবা যুগ্ন আহ্বায়ক করা হয়নি। তালা, শ্যামনগরসহ বাইরের কোন নেতাকে শহর বা শহর উপকণ্ঠের কর্মীরা মেনে নেবে বলে আমার মনে হয় না।

আহ্বায়ক পদ প্রত্যাশী মীর মোহিতুল আলম জানান, আমার মনে হয় না ঘোষিত কমিটি যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিতে পারবে।

সাতক্ষীরা জেলা যুবলীগের আহবায়ক মিজানুর রহমান জানান, যোগ্য ও স্বচ্ছ ইমেজের ব্যক্তিদের কমিটিতে জায়গা হয়েছে। যারা কমিটিতে রয়েছেন তারা সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরীক্ষিত সৈনিক। ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলন করার জন্য কেন্দ্রের যে নির্দেশ তা তিনি প্রতিপালন করবেন বলেও জানান।