নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হলেও ওই সড়কে যাতায়াতকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে যানজট, ভাঙা সড়ক ও চার লেন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের ধীরগতি কাজের কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বলছে, নির্মাণ কাজের অনুমতিপত্র পাওয়ার পর গত সাত মাসে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে একটি কালভার্ট নির্মাণ ও সড়কে বালু ভরাট কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়েছে।
ঢাকা-সিলেট করিডোর দুই লেনের ২০৯ কিলোমিটার সড়ক ভেঙে চার লেনের মহাসড়কে উন্নীত করা হচ্ছে। এর মধ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলার কাঁচপুর থেকে নরসিংদী সীমান্ত পর্যন্ত ১৮.৬৬ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। এই ১৮.৬৬ কিলোমিটার সড়কে ৫টি কলভার্ট, ২টি ছোট ব্রিজ, একটি ফ্লাইওভার ও দুই পাশে সার্ভিস লেনসহ মোট ৬ লেন সড়ক নির্মাণ করা হবে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯২৫.৩৬ কোটি টাকা। ২০২২ সালের ২৪ অক্টোবর চায়না (লংজিয়ান রোড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড) ও দেশি প্রতিষ্ঠান ম্যাকস ইনফ্রাস্টাকচার লিমিটেড নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চার বছরের (নির্মাণকাল) চুক্তি সই করে। চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। গত সাত মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যাত্রামুড়ায় কালভার্ট নির্মাণে পাইলিং স্থাপন ও দুটি স্পটে বালু ভরাটের কাজ শুরু করে।
ব্যস্ততম ১৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে ১০৮টি বড় শিল্পকারখানা রয়েছে। যানজটের আরও একটি কারণ প্রতিদিন এসব প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬/৭ হাজার গাড়ি আসা যাওয়া করে। পাশাপাশি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাত্রীবাহী গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন মিলে প্রতিদিন গড়ে ৪০/৫০ হাজার যানবাহন চলাচল করে। পুরাতন জরাজীর্ণ দুই লেনের এ সড়কের অধিকাংশ স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা-সিলেট সড়কে চলাচলকারী শ্রমিক ইব্রাহিম রহমান জানান, কাঁচপুর থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত সড়কে অধিকাংশ সময় যানজট লেগেই থাকে। দিনরাত যখন তখন যানজটের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্ভোগে পোহাতে হয়। সড়কের অনেক অংশ ভেঙে যাওয়ায় যাত্রীদের নাকাল অবস্থায় পড়তে হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা শওকত আলী জানান, ঢাকা-সিলেট চার লেনের কাজ খুবই ধীরগতিতে চলছে। এ প্রকল্পের কাজ দ্রুত সম্পন্ন না হলে সড়কে যাতায়াতকারীদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে। আমরা এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চাই।
এ বিষয়ে সাসেক ঢাক-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ১ এর উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল আজিম জানান, কাজ অনেকটা এগিয়েছে। ব্যস্ত এ সড়কে যানবাহনের প্রচণ্ড চাপ থাকে। সড়কের দুইপাশে শিল্পকারখানার বর্জ্য ফেলে রাখায় নির্মাণ কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। তারপরেও চুক্তির ৪ বছরের মধ্যে আমরা এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।
সড়ক ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বড় একটি প্রজেক্টের কাজে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১৮.৬৬ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ করছে চাইনিজ ও দেশের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চার বছর মেয়াদে চুক্তিতে কাজ শুরু করেছেন তারা। আশা করছি চুক্তির মেয়াদের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারবেন তারা।