কুড়িগ্রাম জেলা শহরসহ অন্যান্য উপজেলার সঙ্গে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার যোগাযোগ সহজ করতে ব্রহ্মপুত্র নদে ফেরি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ফলে দীর্ঘদিনের প্রতিক্ষার অবসান হতে চলেছে রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার মানুষের। চিলমারী-রৌমারী রুটে এই ফেরি চলাচলের মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামের উন্নয়নে একটি নতুন মাত্রা যোগ হবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) থেকে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়টি শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছেন বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক মাহফুজ আলম সজল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে ‘কুঞ্জলতা’ নামের একটি ফেরি চিলমারীর রমনা ঘাটে পৌঁছছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আরিচা ঘাট থেকে ফেরিটি চিলমারী নৌ-বন্দরের রমনা ঘাটে সংযুক্ত করা হয়েছে। এর আগে ফেরি চলাচলের জন্য সংযোগ সড়ক, পল্টুনসহ সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।
এদিকে, চিলমারী ঘাটে ফেরি আসার খবরে খুশি স্থানীয়সহ এ অঞ্চলের মানুষজন। এই ফেরি চলাচলে শুধু রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলা নয় এর সুবিধা ভোগ করবে জেলার চিলমারী, উলিপুরসহ অন্যান্য উপজেলার মানুষও।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জেলার রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলাবাসীর একমাত্র দুঃখ ব্রহ্মপুত্র নদ। জনপদটির লাখো মানুষকে জেলা শহরে যাতায়াতে ভরসা করতে হয় নৌকার ওপর। বর্ষা মৌসুমে ঝুঁকি বেড়ে যায় নৌপথে। অন্যদিকে শুষ্ক মৌসুমে চরাঞ্চলে আটকে যায় নৌকা। ফলে দুর্ভোগের সীমা থাকে না যাত্রীদের। এছাড়া বাড়তি ভাড়া আর সিডউল বিপর্যয় তো আছেই। তবে ফেরি চলাচল শুরু হলে শেষ হবে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি। সেই সঙ্গে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।
স্থানীয়দের দাবি, বর্ষা মৌসুমে ফেরি সহজে চলাচল করতে পারলেও শুকনো মৌসুমে নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাছল বিঘ্নিত হতে পারে। এজন্য ফেরি চলাচলের পাশাপাশি নিয়মিত ড্রেজিংয়ের দাবি জানান তারা।
রৌমারী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সুজাউল ইসলাম সুজা জানান, নৌ-পথে রৌমারী ঘাট থেকে চিলমারীর রমনা ঘাট পর্যন্ত দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। এই পথে নৌকায় যেতে সময় লাগে আড়াই থেকে ৩ ঘণ্টা। কিন্তু ফেরিতে সময় লাগবে অর্ধেক। ফেরি চালু হলে নদী পথে যাতায়াতের যে ঝুঁকি সেটা থাকবে না। ফেরি চালু হলে ব্রহ্মপুত্র দ্বারা বিচ্ছিন্ন আমাদের এই দুই উপজেলার মানুষের কষ্ট কমে যাবে। পাশাপাশি ব্যবসা বাণিজ্যেরও উন্নয়ন হবে।
বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক মাহফুজ আলম সজল জানান, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ফেরিটি উদ্ধোধন করবেন। এই নৌরুটে পরে আরো একটি ফেরি যুক্ত করা হবে। নিয়মিত ফেরি দুটি নৌরুটে চলাচল করবে।
তিনি আরও জানান, নাব্যতা সংকট দূর করতে চিলমারী ও রৌমারী ঘাটে দুটি ড্রেজার অবস্থান করবে। ফেরি চলাচলে কোথাও বিঘ্ন দেখা দিলে ড্রেজার দুটি সার্বক্ষনিক কাজ করবে।