সারা বাংলা

বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে মৃত্যু, ৩ সদস্যের কমিটি গঠন

বগুড়ায় ডিবি পুলিশের হেফাজতে হাবিবুর রহমান (৪০) নামে এক আইনজীবীর সহকারীর মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার (৪ অক্টোবর) বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আখতারকে প্রধান করে কমিটি গঠন করেন পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। 

কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শরাফত ইসলাম ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিএসবি) পরিদর্শক-১ জিএম শামসুন নূর।

মারা যাওয়া হাবিবুর রহমান শাজাহানপুর উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের জোড়া দামার পাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস বাবলুর ছেলে। তিনি বগুড়া জজ আদালতে সিনিয়র আইনজীবী মঞ্জুরুল হকের ভাগ্নে এবং তার সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এছাড়া তিনি বগুড়া জেলা আইনজীবী সহকারী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন।

আরও পড়ুন: বগুড়ায় ডিবি হেফাজতে আইনজীবীর সহকারীর মৃত্যুর অভিযোগ

তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) স্নিগ্ধ আখতার বলেন, কমিটিকে আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে একটি হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে হাবিবুর রহমানকে আটক করে বগুড়ার ডিবি পুলিশ। এরপর রাত সাড়ে ৮টায় ডিবি পুলিশ হাবিবুর রহমানকে বগুড়ার সরকারি মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাবিবুর রহমান।

হাবিবুর রহমানের মৃত্যুর পর তার স্বজন এবং সহকর্মীরা দাবি করেন, ডিবি ‍পুলিশের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হাবিবুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়নি। মৃত অবস্থাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 

স্বজন ও সহকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে এবং হাবিবুর রহমানের মৃত্যু সম্পর্কে পুলিশ জানায়, হাবিবুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পায়নি পুলিশ। ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পরপরই হাবিবুর রহমান বুকে ব্যথা অনুভুব করেন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তিনি মারা যান।

ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, ১০ বছর আগ শাজাহানপুরের রানীরহাট জোড়া এলাকার ১৩ বছরের বিপুল নামের এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ওই হত্যা মামলার আসামি ছিলেন হাবিবুর রহমান। ওই মামলার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী ছিলেন শিশুর সৎ মা খুকি বেওয়া। চলতি বছরের গত ৪ আগস্ট দুই দিন ধরে নিখোঁজ বৃদ্ধা খুকি বেওয়ার দুই পা কাটা বস্তাবন্দি লাশ জোড়া তালপুকুর এলাকায় থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই সময় একটি কাটা পা পাওয়া গেলেও গত মঙ্গলবার বিকেলে ওই গ্রামের মনোয়ারা বেওয়ার বাড়ির সেফটিক ট্যাংক থেকে আরেকটি পা পাওয়া যায়। তাকে আটক করে শাজাহানপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে হাবিবুর রহমানসহ আরও বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে। এরপর হাবিবুর রহমানকে ডিবি পুলিশ সন্ধ্যায় আটক করে। পরে মনোয়ারা বেওয়ার সামনে নিয়ে গেলে হাবিবুর রহমান বুকে ব্যথা অনুভব করছেন বলে জানায়। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার মৃত্যু হয়।