একই আঙিনায় মসজিদ ও মন্দির। প্রায় চার দশক ধরে মিলেমিশে মুসলিম সম্প্রদায়ের ইবাদত আর হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনা চলছে। সময়মতো হচ্ছে আজান ও নামাজ, নিয়ম করে চলে পূজাঅর্চনাও। এক পাশে চলে জিকির অন্য পাশে উলুধ্বনি।
এভাবে, ধর্মীয় সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে পৃথক দুটি ধর্মীয় উপাসনালয়। ধর্মীয় সম্প্রীতির এমন উজ্জ্বল নিদর্শন রয়েছে নড়াইল পৌরসভার মহিষখোলা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কোনো এক সময় নড়াইলের পুরান সাব রেজিস্ট্রি অফিস মহিষখোলায় ছিল। ১৯৭৪ সালে সেই কার্যালয়ের পাশেই মহিষখোলা পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি অফিস জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালে নতুন করে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আর ১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা মন্দির।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিত্র নদীর পাড়ে মাঠের পশ্চিম পাশে মসজিদ, আর উত্তর পাশে রয়েছে মন্দিরটি। মন্দিরটি উত্তর-দক্ষিণামুখী।
মহিষখোলা গ্রামের ছানোয়ার রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে আমরা হিন্দু-মুসলিম একই পরিবারের সদস্য হিসেবে বসবাস করে আসছি। এলাকায় কখনো ধর্ম নিয়ে কোনও বিরোধ হয়নি। এলাকার মানুষ মনে প্রাণে অসাম্প্রদায়িক। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
মহিষখোলা সার্বজনীন পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি সুমন দাস বলেন, এই গ্রামে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ বেশি হলেও কখনো পূজা-অর্চনা করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হইনি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা মিলেমিশে এখানে বসবাস করছি।
মহিষখোলা পুরাতন সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয় জামে মসজিদ কমিটির সদস্য সাগর হোসেন খান বলেন, মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে মন্দির কমিটিকে নামাজের সময়সূচী দেওয়া হয়েছে। নামাজের সময় মন্দির কমিটি তাদের কার্যক্রম সীমিত রাখে। নামাজ শেষ হলে স্বাভাবিক নিয়মেই পূজা-অর্চনা চলে। এ নিয়ে কোনও সংঘাত হয়নি। আমরা সবাই মিলেমিশে একসঙ্গেই থাকতে চাই।