সারা বাংলা

মারা গেছেন ‘খাদক’ বাবুল

রাজশাহীর ‘খাদক’ বাবুল আকতার মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে মারা যান ৫০ বছর বয়সী এই পালোয়ান। তিনি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম ইউনিয়নের গঙ্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অস্বাভাবিক বেশি খাবার খেতে পারতেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সকালে গঙ্গারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে বাবুল আকতারকে দাফন করা হয়েছে। মারা যাওয়ার সময় বাবুল আকতার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণাগ্রাহী রেখে গেছেন।

বাবুল আকতার এক বসায় ১৮ কেজি মাংস ও ১০০ ডিম খেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। অনেকে তার সঙ্গে দেখা করতে বাড়ি পর্যন্ত ছুটে যেতেন দূর-দূরান্ত থেকে। ২০১৮ সালে বাবুল আকতার ক্যামেরার সামনে বসে ৪ ঘণ্টা ১৮ মিনিটে ১৮ কেজি খাসির মাংস খান। পরে ১০০টি মুরগির ডিম এক টেবিলে বসে খেয়েছিলেন। তখন থেকে তিনি ‘খাদক বাবুল’ হিসেবে পরিচিতি পান।

বাবুল আকতার ২০ থেকে ২৫ কেজি ওজনের একটি কাঁঠাল নিমেষেই খেতে পারতেন। বিদ্যুতের গতিতে ১১ মণ ওজনের কাঠের গুঁড়ি একাই কাঁধে তুলে নিয়ে বহন করতেন। এক দৌড়ে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করতেন স্বাভাবিকভাবে। একটানা চার ঘণ্টা সাঁতার দিয়েও ক্লান্তি বোধ করতেন না তিনি। ১২৫ কেজি ওজনের বিশাল দেহ নিয়ে অনায়াসে গাছে উঠে ডাব পেড়ে খেতেন। তবে কারও সঙ্গে বাজি ধরে এসব কাজ করতেন তিনি। তবে বয়স বৃদ্ধির পর শারীরিক কিছু সমস্যার কারণে চিকিৎসকের কথামতো খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন এই বাবুল আকতার।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাবুল দীর্ঘদিন ধরে বাত ও ব্যথার রোগে ভুগছিলেন। শারীরিক পরীক্ষায় এক মাস আগে কিডনি ও হৃদরোগ ধরা পড়ে তার। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন তিনি। গতকাল রাতে তিনি বাড়িতেই মারা যান। 

মনিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাবুল আকতারের অনেক জমি ছিল। সাংসারিক ছাড়া অন্য কোনো কাজ করতেন না তিনি। জমি বিক্রি করে খেয়ে প্রায় শেষ করেছেন। তিনি খুব মিশুক প্রকৃতির লোক ছিলেন। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল তার। তবে শারীরিক সমস্যার কারণে মৃত্যুর আগে তিনি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি মারা গেলেও তার কথা সবার মনে থাকবে।’