গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় স্বামীকে আটকে রেখে এক নববধূর শ্লীলতাহানি চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর শ্বশুর ৪ জনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়ায় থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। তবে, রোববার (৫ নভেম্বর) পুলিশ জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগই পায়নি।
গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনার তিন দিন পার হলেও কোনো আইনি সহায়তা পায়নি ভুক্তভোগীর পরিবার বলে অভিযোগ উঠেছে।
নববধূর শ্বশুর জানান, গত ২৯ অক্টোবর সামাজিকভাবে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এরপর তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসায় নিয়ে আসি। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া চৌরঙ্গী মোড়ে বাঁশবাড়িয়া চৌরঙ্গী মোড়ের ওমর তালুকদারের বখাটে ছেলে নাইম তালুকদার (২১), ঠান্ডা তালুকদারের ছেলে মিজু তালুকদার (২২) এবং তাদের সহযোগীরা জোর করে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে প্রবেশ করে। তারা ঘরে ঢুকে বিয়ের কাবিন নামা দেখতে চায়। এসময় তারা আমার ছেলেকে জোর করে বাথরুমে আটকে রাখে। এরপর অভিযুক্তরা আমার ছেলের স্ত্রীর শ্লীলতাহানি করে এবং অশ্লীল ছবি মোবাইলে তুলে রাখে। এরপর থেকে অভিযুক্তরা আমাদের হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, এঘটনায় বখাটে নাইম তালুকদার (২১) ও মিজু তালুকদারসহ চারজনকে জনকে আসামি করে টুঙ্গিপাড়ায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
ভুক্তভোগী নববধূ বলেন, রাত আনুমানিক ৩টার দিকে কয়েকজন যুবক বিড়ি ধরানোর জন্য আগুন চায়। আমার না বলেলে তারা জোড় করে ঘরের দারজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তারা আমার স্বামীকে বাথরুমে আটকে রাখে। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে পাশের ঘরে থাকা আমার শ্বশুর-শাশুড়ি এগিয়ে আসলে ওই যুবকরা তাদেরকে মারধর করে ও বেঁধে ফেলে। পরে তারা জোর করে মোবাইল দিয়ে আমার অশ্লীল ছবি তুলে রাখে। ওই যুবকরা আমাকে হত্যার হুমকি এবং আমার ছবি ফেসবুকে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেয়। আমি এখন অনিশ্চয়তায় ভুগছি। আমি বিচার চাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার বলেন, এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের এলাকায় একদল নেশাগ্রস্ত বখাটে লোক নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে প্রায়ই এমন অপকর্ম করে থাকে। স্বামীকে আটকে রাখে এবং অপর দুই জন নববধূকে শ্লীলতাহানি চেষ্টা করে। এ সময় আমরা চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে বখাটেরা পালিয়ে যায়। ভয়ে কেউ কিছু বলতে চায় না।
এ বিষয়ে প্রধান অভিযুক্ত নাইম তালুকদারকে না পাওয়া গেলেও তার মা রেক্সোনা বেগম বলেন, গভীর রাতে একজনের ঘুরে ঢুকে অন্যায় করেছে আমার ছেলে। আমি এ বিষয়ে আমার ছেলের পক্ষ থেকে তাদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। আমার ছেলে না বুঝে এমন কাজ করেছে। আমার ছেলে বখাটে নয়।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটেছি বলে আমি শুনেছি। এখন পযর্ন্ত আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।