সারা বাংলা

উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলী বরিশালে

বরিশাল নগরীতে প্রতিবছরের মতো এবারও উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ শ্মশান দীপাবলী উদযাপিত হয়েছে। শনিবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত হাজারো মানুষ এই শ্মশান  দীপাবলী উৎসবে অংশ নেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় ২০৬ বছর আগে ৫ একর ৯৫ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় মহাশ্মশান। এ শ্মশানে ৩০ হাজার পাকাসহ মোট সমাধি রয়েছে প্রায় ৫০ হাজার। প্রয়াতদের স্বজন যারা বরিশালসহ সারাদেশে তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছেন তারা সমাধির পাশে এসে নিজেদের আত্মীয়-স্বজনদের আত্মার শান্তির কামনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে প্রার্থনা করেন। এখানে গীতা পাঠ করে প্রার্থনা করার সময় অনেকই প্রয়াত স্বজনদের  জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষের পাশাপাশি শিশুরাও আসেন মারা যাওয়া স্বজনদের জন্য প্রার্থনা করতে। 

প্রাচীন এই শ্মশান  দীপাবলী উৎসবে আগতরা তাদের স্বজনদের সমাধিতে মোমবাতি, প্রদীপ, ধূপ কাঠি প্রজ্বালন করেন এবং সমাধিতে প্রিয়জনের প্রিয় খাবার রাখেন। এ অনুষ্ঠান রোবাবার রাত ১২টা ১ মিনিটে কালীপূজা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হবে।

উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা জানান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে প্রতিবছর ভূত চতুর্দশী ও পূণ্যতিথিতে এই আয়োজন বরিশালে সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব বলে বিবেচিত। অপর‌দিকে, শ্মশান  দীপাবলী উৎসবকে ঘিরে প্রায় ৭ একর এলাকা জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানায়  দীপাবলী উদযাপন কমিটি। এছাড়া, ঐতিহ্যবাহী, সর্ববৃহৎ শ্মশান দিপাবলী উৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। শ্মশান দিপাবলী এলাকায় ২০টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। 

বরিশাল মহাশ্মশান কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জী কুন্ড বলেন, প্রতি বছর পূর্ব পুরুষের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে  দীপাবলীর সময় দেশ ও বিদেশ থেকে ১০-১৫ হাজার মানুষ এখানে আসেন। বিশেষ করে ঐতিহ্যবাহী শ্মশান দিপাবলী উৎসব অনুষ্ঠানে অন্যান্যবারের মতো ভারত, নেপালসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোক সমাগম হয়েছে। প্রিয়জনের স্মৃতির উদ্দেশ্যে জ্বালানো মোমের আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে পুরো শশ্মান।