সারা বাংলা

অরুণিমার আপন রাজ্যে অতিথি পাখির মিলনমেলা

প্রকৃতিতে বইছে শীতের হাওয়া। আর শীত এলেই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অতিথি পাখিরা আসতে শুরু করে। দেশের যে কয়েকটি স্থানে বৃহৎ পরিসরে অতিথি পাখির উপস্থিতি দেখা যায়, তার মধ্যে অন্যতম নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পানিপাড়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশে গড়ে ওঠা অরুণিমা রিসোর্ট গলফ ক্লাব।

নড়াইল শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে নিভৃত পল্লীতে ৫০ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা এই রিসোর্টটি যেন পাখিদের এক আপন রাজ্য। বছরের ১২ মাসই এখানে দেখা মেলে বিভিন্ন প্রজাতির দেশি পাখি। আর নয় মাস থাকে বিদেশি পাখিরা। শীতের হাওয়া বইতেই তাই ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখিরা ছুটে আসছে অরুণিমায়। দিন যত যাচ্ছে, শীতের সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পাখির সংখ্যা। সেই সঙ্গে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থা থাকায় প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক দর্শনার্থী ভিড় করছেন অরুণিমায়।

মঙ্গলবার বিকেলে দেখা যায়, সকালে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়া পাখিরা বিকেল হতেই রিসোর্টে ফিরতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা এসব পাখিরা বসছে রিসোর্টের বৃহৎ পুকুর পাড়ে অবস্থিত সবুজ গাছপালার ডালে ডালে। ছুটে আসা পাখিদের ডালে বসার অপরূপ দৃশ্য, ডানা ঝাপটানি ও কিচিরমিচির শব্দ মোহিত করছে দর্শনার্থীদের। এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের থাকার জন্য রয়েছে সুব্যবস্থা। অরুণিমার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত ছুটে আসছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

এ সময় কথা হয় কাশিয়ানী থেকে আসা কলেজ প্রভাষক শাহিনুর আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, লেকে নৌকা চড়া ও মাছ ধরা সবকিছু মিলিয়ে একটু ভিন্ন ধরনের অনুভূতি হচ্ছে। এখানে প্রকৃতির সঙ্গে যেন নিজেকে বিলীন করে দেওয়া যাচ্ছে। ফুলে-ফলে ভরা অরুণিমায় যা খাচ্ছি তার সবই অর্গানিক। যা স্বাস্থ্যের পক্ষেও ভালো। আর বুক ভরে ফ্রেশ অক্সিজেন নিতে পারছি। এখানে ঘুরতে এসে অনেক পাখি দেখেছি। কিন্তু অরুণিমায় একটু ব্যতিক্রম দেখলাম। 

রিসোর্টের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের সদস্য খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, অরুণিমা রিসোর্টে বারো মাস দেশি পাখি এবং নয় মাস বিদেশি পাখি অবস্থান করে। পর্যটকদের আপ্যায়নের জন্য ন্যাচারালি সবজি, ফল, মাছসহ সবকিছু এখানে উৎপন্ন করা হয়। পর্যটনের জন্য এমন পরিবেশ অত্যন্ত প্রয়োজন। সরকার আরেকটু নজর দিলে বাংলাদেশের পর্যটন খাত আরও বেশি এগিয়ে যাবে বলে মনে করেন তিনি।