ঘূর্ণিঝড় মিধিলির কারণে ফেনীতে সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। তীব্র বাতাসে জেলার প্রতিটি উপজেলায় হাজার হেক্টর আমন ধান জমিতে নুইয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ফলে ধান কাটার আগ মূহূর্তে এসে ক্ষতির শঙ্কা করছেন তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার সোনাগাজী, ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া উপজেলাসহ প্রায় সব উপজেলার কৃষকদের আমন ধান জমিতে নুইয়ে পড়েছে।জমির ওপর উপড়ে পড়েছে গাছপালা। অতিবৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে ফসলি জমিতে।
ছাগলনাইয়ার নিজকুঞ্জরা গ্রামের কৃষক মমিনুল হক বলেন, ফলন ভালো হলেও আমন ধান ঘরে তুলতে পারব কি না জানি না। বাতাসে ১৫ শতকের বেশি জমির ধান নুইয়ে পড়েছে। এছাড়া সকাল থেকে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। রাতে সবকিছু স্বাভাবিক না হলে আমাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
পরশুরামের বীরচন্দ্র নগর এলাকার কৃষক আবুল কালাম বলেন, ২০ শতকের বেশি জমির ধান বাতাসের কারণে নুইয়ে পড়েছে। এক মাস পরেই ধান কাটার কথা। কিন্তু শেষ মূহূর্তে এমন বিপর্যয় আশা করিনি। জানি না ফসলের কেমন ক্ষতি হবে, তবে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে।
ফুলগাজীর কৃষক আবু জাফর বলেন, ধানের পাশাপাশি রবি শস্য রোপণের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু আজকের পর আবাদ আরও পিছিয়ে যাবে। সময়মতো ফসল ফলাতে না পারলে লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে।
সোনাগাজীর চরদরবেশ গ্রামের কৃষক মানু মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দমকা হাওয়া ও মাঝারি বৃষ্টিতে আমার ১০ শতক জমির ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান জানান, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট না হলেও চরচান্দিয়া ইউনিয়নে ফসলি জমির ধান নুইয়ে পড়েছে। ৭৮ হেক্টরের আমন ধানের মধ্যে ৫৫ হেক্টর ধান নুইয়ে পড়ার খবর পেয়েছি। জমিতে জলাবদ্ধতা না হলে ফসলের খুব বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবে না।
ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন জানান, জেলার প্রতিটি উপজেলায় হাজার হাজার হেক্টর আমন ধান জমিতে ঢলে পড়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের মাঠ পর্যায়ে প্রতিবেদন তৈরি করতে বলা হয়েছে। ঝড়ের কারণে রবিশস্য আবাদ পিছিয়ে যেতে পারে।