সারা বাংলা

পালিয়ে যাওয়া পাইক্ষ্যং পাড়ার ৫৭ পরিবার ফিরেছেন

বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) আতঙ্কে পালিয়ে যাওয়া পাইক্ষ্যং পাড়ার ৫৭ বম পরিবারের ২০০ সদস্য আট মাস পর নিজ বসতভিটায় ফিরেছেন। বাড়িতে ফিরলেও তাদের মধ্যে এখনো ভয় কাজ করছে।

সোমবার (২০ নভেম্বর) রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের দুর্গম এলাকা পাইক্ষ্যং পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, যেসব পরিবারের সদস্যরা ফিরেছেন তাদের চোখে মুখে ঘরে ফেরার আনন্দের হাসি। কিন্তু এখনও ভেতরে চাপা আতঙ্ক আর ভয় কাজ করছে। এখনো যারা ফিরতে পারেননি তাদের ঘরগুলো লতাপাতায় ঢেকে আছে। কাঠের ঘরের বারান্দায় এলোমেলো হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে কাপড়।

পাইক্ষ্যং পাড়ার কারবারি (পাড়া প্রধান) পিতর বম জানান, কেএনএফের অপতৎপরতার কারণে গত এপ্রিল মাসে পাড়ার ৯৭টি পরিবার ভয়ে ও আতঙ্কে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় নিজ বসতভিটায় গত শনিবার ৫৭ পরিবারের প্রায় ২০০ জন সদস্য ফিরে এসেছেন। অবশিষ্ট ৪০ পরিবারও অচিরেই গ্রামে ফিরে আসবেন বলেও জানান তিনি। 

পাইক্ষ্যং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোয়াত লিয়ান বম জানান, পাড়ার লোকজন ভয়ে সবাই বিভিন্ন জায়গায় নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।এ কারণে এখানকার বিদ্যালয় সাত মাস বন্ধ ছিল। গতকাল রোববার থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে নিয়মিত আসতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হবে।   

পাইক্ষ্যং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী লাকি লালরিন জুয়াল বম জানান, গতকাল রোববার স্কুল খুলেছে। এখন নিয়মিত স্কুলে যেতে পারবো। 

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমা জানান, আট মাস পর এলাকার লোকজন ফিরতে শুরু করেছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ফিরে আসা পাড়াবাসীদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি। 

বান্দরবান সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান জানান, পাইংক্ষ্যং পাড়ায় ৫৭ পরিবার ফিরে এসেছে। তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষ থেকে ফেরত আসা সব পরিবারের সদস্যদের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে রোয়াংছড়ি-পাইক্ষ্যং পাড়া সড়ক সংস্কার কার্যক্রম পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে চলমান রয়েছে।