কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় চলতি বছর ১৪৫ হেক্টর জমিতে তুলার আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। কৃষকরা বলছের, সব খরচ উঠে কয়েকগুণ বেশি লাভ হবে। সাম্প্রতিক সময়ে এই ফসলে ভালো লাভ হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের তুলা চাষে আগ্রহ বাড়ছে।
ভেড়ামারা কটন ইউনিট কর্মকর্তা মনজুয়ার বেগম বলেন, রুপালী-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২, ইস্পাহানী শুভ্র-৩, লালতীর ডিএম-৪, সিবি-১, উফশী জাতের তুলা চাষ করা হয়েছে। এই জাতগুলো বিঘাপ্রতি ১৬-২০ মন হারে ফলন হয়।
তিনি বলেন, উপজেলায় চলতি বছর ১৪৫ হেক্টর জমিতে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে, সরকারি সহযোগিতায় বিভিন্ন প্রদর্শনী ও কৃষকের নিজ অর্থায়নে চাষ করা হয়েছে। ভালো ফলন ও ন্যায্য দাম পাওয়ায় আগামীতে চাষির সংখ্যা আরও বাড়বে।
মনজুয়ার বেগম বলেন, তুলা গ্রীষ্মকালীন ফসল। মে মাসের শেষ ভাগ থেকে শুরু করে জুনের প্রথমার্ধ পর্যন্ত জমিতে তুলা বীজ বপন করতে হয়। বীজ বপনের ৬ মাস পর তুলা সংগ্রহ করা যায়। তুলা চাষ ছড়িয়ে দিতে তুলা উন্নয়ন বোর্ড ও বিভিন্ন প্রকল্প কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করছে সরকার।
চাষি আমজাদ হোসেন জানান, তুলা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তিনি। ৫ বিঘা জমি বন্ধক নিয়ে তুলা চাষ করেছেন। তুলা চাষে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে অনেক অনুর্বর, নিষ্ফলা বা অনাবাদী জমিতে তুলা চাষ করে অনেকের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব।
চাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, নিষ্ফলা জমিতে তুলা চাষ করায় একদিকে যেমন জমির সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে কৃষকরা বেশি টাকা পাচ্ছে। তাদের পরিবারে সচ্ছলতা আসছে। অনেকে ধান ও গমসহ বিভিন্ন আবাদ ছেড়ে তুলা চাষে আগ্রহী হয়েছে।
তুলা চাষিরা জানান, রুপালী-১, হোয়াইট গোল্ড-১, হোয়াইট গোল্ড-২, ইস্পাহানী শুভ্র-৩, লালতীর ডিএম-৪, সিবি-১, উফশী জাতের তুলা প্রতি বিঘাতে বীজসহ উৎপাদন হয় ১৫ থেকে ২০ মণ করে। যার বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এমন অনুর্বর জমিতে অন্য কোনো ফসলে এই লাভ পাওয়া সম্ভব না। আবার একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষ করেও বাড়তি আয় করা যায়।