পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার পাওয়া গেল ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা। এর আগে এত টাকা আর পাওয়া যায়নি। সারা দিন টানা গণনা শেষে শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচলানা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ টাকার পরিমাণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। দেশি নগদ টাকা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিদেশি মূদ্রা ও সোনা-রূপার অলঙ্কারও পাওয়া গেছে সিন্দুকে।
তিন মাস ২০ দিন পর শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে খোলা হয় মসজিদের নয়টি দানবাক্স বা সিন্দুক। জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচলানা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের তত্ত্বাবধানে সিন্দুকগুলো খোলা হয়। এ সময় দানবাক্স খোলা উপ-কমিটির আহ্বায়কসহ বেশ কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত ছিলেন। দানবাক্স খোলা ও গণনাকে ঘিরে মসজিদসহ আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আড়াইশত লোক সকাল থেকে রাত অবধি টাকাগুলো গুনে শেষ করেন।
গত ১৯ আগস্ট এর আগে মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। সেদিন পাওয়া যায় ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। এর আগে গত ৬ মে খোলা হয়েছিল দানবাক্স। তখন সেখানে পাওয়া যায় ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
সকালে নয়টি সিন্দুক খোলার পর টাকাগুলো বস্তাবন্দি করা হয়। এতে প্রয়োজন পড়ে ২৩টি বস্তা। পরে বস্তাগুলো মসজিদের দো-তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সারা দিন চলে গণনাপর্ব। টাকা গণনায় সহযোগিতা করে রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারি, স্থানীয় মাদ্রাসার ১৩৮ জনসহ মোট ২৫০ জন। পাগলা মসজিদের টাকা রূপালী ব্যাংকে রাখা হয়ে থাকে।
স্থানীয়রা জানায়, মুসলমানসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজন এ মসজিদে দান করে থাকে। এখানে দান করলে মনোবাসনা পূরণ হয়-এমন বিশ্বাস থেকে তারা ছুটে আসে পাগলা মসজিদে। দান করে মোটা অঙ্কের টাকা।
মসজিদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকার লভ্যাংশ থেকে গরিব অসহায় লোকদের সহযোগিতা করা হয়। তাছাড়া ক্যানসারসহ জটিল রোগে আক্রান্তদের আর্থিকভাবে অনুদান দিয়ে মসজিদটি আর্তমানবতার সেবায় ভূমিকা রাখছে।
মসজিদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, দানের টাকায় মসজিদের বড়সড় উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। মসজিদ ঘিরে এখানে আন্তর্জাতিক মানের একটি দৃষ্টিনন্দন বহুতল ইসলামি কমপ্লেক্স নির্মিত হবে। যেখানে ৩০ হাজার মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ নানা আয়োজন। কমপ্লেক্সের প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। দ্রুত সময়ের মধ্যে শুরু হবে প্রকল্পের কাজ।