একযুগ আগে একে অন্যকে পছন্দ করে বিয়ে করেন সরোয়ার হোসেন (৩৬) ও লাইলী খাতুন (৩০)। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসার কোনো অভাব ছিল না। আট বছরের একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তাদের ছিল সুখের সংসার। তাইতো অসুস্থ স্ত্রীর মৃত্যুর শোক সহ্য করতে না পেরে ১০ মিনিটের ব্যবধানে মারা গেলেন অটোভ্যানের চালক সরোয়ারও।
বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জানাজা শেষে স্থানীয় ভেড়ামারা কবরস্থানে দাফন করা হয় স্বামী-স্ত্রীকে।
এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান সারোয়ার-লায়লী দম্পতি। মুহূর্তের ব্যবধানে এই দম্পতির মৃত্যুতে পুরো হাসপাতালে শোকের ছায়া নেমে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাবনার পার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের চক্রপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে সরোয়ার। তিনি অটোভ্যান চালিয়ে এবং দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতেন। কিছুদিন ধরেই সরোয়ারের স্ত্রী লাইলী অসুস্থ ছিলেন। স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক দিয়ে স্ত্রীর চিকিৎসাও করিয়েছেন সরোয়ার। গত দুই দিন আগে আরো অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন লাইলী। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে অবস্থার অবনতি হলে লাইলীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে আসেন সারোয়ার। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লাইলী। এ সময় চিৎকার করে কান্না করতে থাকেন সরোয়ার। ১০ মিনিট পর তিনি অচেতন হয়ে যান। চিকিৎসক চেষ্টা করেও সরোয়ারের জ্ঞান ফেরাতে পারেননি।
ভাঙ্গুড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফাহমিদা সুলতানা বলেন, স্ত্রীর মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে তার স্বামী কার্ডিয়াক এরেস্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। মানুষ হঠাৎ করে বেশি শক পেলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে।
পার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক বলেন, অল্প সময়ের ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রীর এমন মৃত্যু খুবই দুঃখজনক। এমন মৃত্যুতে গ্রামের সবাই শোকাহত।