সারা বাংলা

আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়ালেও হতাশ চাষিরা

ঠাকুরগাঁওয়ে আমন মৌসুমে অনাবৃষ্টি ও খরা থাকায় কৃষকরা ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে, কৃষি অধিদপ্তরের পরামর্শে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফলন হয়েছে। কিন্তু চিকন চালের আশানুরূপ ফলন ও দাম না পাওয়ায় অসন্তুষ্ট কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ফলন হয়েছে ৭ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান।

উৎপাদিত ধান প্রক্রিয়াজাত শেষে ৪ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন চাল পাওয়া যাবে। বর্তমানে ধানের নূন্যতম বাজার দর প্রতি মণ ১ হাজার টাকা অনুযায়ী জেলায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ধান উৎপাদন হয়েছে।

কৃষকরা বলছেন, মোটা জাতের ধানের ফলন ভালো হলেও অনাবৃষ্টির কারণে চিকন জাতের ধানের ফলন তেমন ভালো হয়নি। মোটা জাতের ধানের ফলন বিঘাপ্রতি ২০-২৫ মণ পেলেও খরচের তুলনায় দাম কম পাওয়া যাচ্ছে।

লাল মিয়া নামের এক কৃষক বলেন, ধানের ফলন মোটামুটি ভালোই হয়েছে। কিন্তু খরচের তুলনায় দামে পোষাচ্ছে না। এক বিঘা জমিতে ধান আবাদ করতে প্রায় ১৫-১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আর ফলন পাচ্ছি ২০-২৪ মণ।

রমণী বর্মণ নামের এক চাষি বলেন, বর্তমানে ৮০ কেজি ধানের বস্তা বিক্রি হচ্ছে ২০০০ থেকে ২২০০ টাকায়। ৪-৫ মাস ধরে কষ্ট ও পরিশ্রম করে ধান আবাদ করেছি। হিসেব করে দেখা যাচ্ছে বিঘাপ্রতি ৫-৬ হাজার টাকা লাভ হচ্ছে।

জগদীশ চন্দ্র রায় নামের এক কৃষক বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে এবার তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়াতে আমন ধান মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে রোপণ করতে হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় ৩৪ জাতের ধানের ফলন তেমন ভালো হয়নি। তবে, মোটা জাতের ধানের ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে।

তরক লাল নামের আরেক কৃষক বলেন, ৩৪ জাতের ধান করে এবার তেমন লাভবান হতে পারিনি। গতবার এই ধানের বাজার ভালো থাকলেও এবার এ জাতের ধানের দাম ও ফলনও কম। প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০০০ থেকে ৩২০০ টাকায়। গত বছর ছিল ৫-৬ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে জেলায় আমন ধান কর্তন সম্পন্ন হয়ে গেছে। ফলন লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি হয়েছে। বর্তমানে সারের মূল্য সামান্য বৃদ্ধি পেলেও ধানের দাম বেশ ভালো।