মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় স্বল্প জমিতে মিশ্র আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন কৃষকেরা। অনেক কৃষক একই জমিতে দুই-তিন ফসল চাষ করে লাভবান হয়েছেন। মিশ্র পদ্ধতিতে চাষাবাদের কারণে কৃষকেরা কম খরচে বেশি ফসল পাচ্ছেন। ফলে এই উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে মিশ্র চাষ পদ্ধতি।
গ্রামের পর গ্রাম ছড়িয়ে পড়ছে এই চাষ পদ্ধতি। এবারও মিশ্র আবাদে ভালো লাভ করবেন বলে আশা করছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকেরা ডায়মন্ড, কার্ডিনাল, দেশীয় জাতের লাল পাকড়ী আলু চাষ করছেন। আলু বীজ রোপণের সঙ্গে একই জমিতে সাথি ফসল হিসেবে মিষ্টি কুমড়া, ধনেপাতা, টমেটো, শিম, রসুন, কপি, মুলা, মরিচের আবাদ করছেন।
মিশ্র পদ্ধতিতে আবাদের মাধ্যমে আগাম সবজি হিসেবে বাজারে এসেছে ধনেপাতা, লাল শাক, মুলা, শসা, করলা, আলু ও শিমসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি।
উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামের সবজি চাষী কদম আলী বলেন, ‘আমি ৫৫ শতক জমিতে মিশ্র সবজি চাষ করেছি। আমার জমি কম থাকায় বেশি লাভের আশায় এক জমিতেই কয়েক রকমের সবজির আবাদ করতে হয়েছে। জমিতে আলু চাষের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে টমেটো, লাল শাক, ধনেপাতা, কাঁচা মরিচ, বাধাঁকপি, ফুলকপি ও শিমের আবাদ করেছি। ফলনও অনেক ভালো হয়েছে। আশা করছি এতে বাড়তি আয় হবে এবং অনেক লাভবান হতে পারব।’ হরগজ খাসেরচর এলাকার কৃষক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে যার আলু যত আগে উঠবে, তার লাভ তত বেশি। তাই আগেভাগেই আলু আবাদ করছি।’
তিনি আরও জানান, আলুর ক্ষেতে মাচা তৈরি করে শিম, শসা, লাউ ও বরবটি আবাদ করছেন। এরই মধ্যে শসা বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘উপজেলায় এবার সবজির আবাদ হয়েছে ৯১০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে আলু আবাদ হয়েছে ১২০ হেক্টর জমিতে, ২০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া এবং বাকি জমিতে অন্যান্য সবজির মিশ্র আবাদ হয়েছে। একই জমিতে মিষ্টি কুমড়া, ধনেপাতাসহ অন্যান্য ফসল মিশ্র আবাদ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। মিশ্র আবাদে কম খরচে ভালো ফলন পাওয়ায় উপজেলায় দিন দিন মিশ্র পদ্ধতিতে চাষাবাদের প্রতি ঝুঁকছেন কৃষকেরা। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে যাতে উপজেলার কৃষকেরা মিশ্র পদ্ধতিতে চাষাবাদে লাভবান হয়ে উঠতে পারেন।’