দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাবনা-১ আসনে ‘নৌকা’ ও ‘ট্রাক’ প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনটি পৃথক মামলা হয়েছে। এসব মামলার মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে দুটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধি।
গতকাল শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদের নির্বাচনি প্রচার মিছিল সাঁথিয়া বাইপাস রোড দিয়ে যাওয়ার সময় নৌকার সমর্থকরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের প্রায় ১০ জন আহত হন।
আরও পড়ুন: সাঁথিয়ায় নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত ১০
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সোহেল রানা বাদী হয়ে ৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ এনে একটি মামলা করেন। মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মাহামুদ দেলোয়ার, সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মিরাজুল ইসলাম। প্রায় একই আসামিদের বিরুদ্ধে নৌকা প্রার্থীর সমর্থক আবু সাইদ বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে মারপিট করে আহত করার অভিযোগ এনে আরও একটি মামলা করেন। আওয়ামীলীগ প্রার্থীর পক্ষে দায়ের করা দুই মামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী সুজা আলী ও কালু হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ নিজেই বাদী হয়ে সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র মাহাবুবুল আলম বাচ্চুসহ ১৪ জন আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছেন। মামলায় তার নির্বাচনি প্রচারণার মিছিলে হামলা ও কর্মীদের আহত করার অভিযোগ করা হয়। এ মামলায় ছাত্রলীগ কর্মী রুবেল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, তিনটি মামলাই রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। শুক্রবারের ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।
এদিকে, আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও দলীয় নেতাকর্মীদের আহত করার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করা হয়। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিলটি সাঁথিয়া বাজার প্রদক্ষিণ করে। একই দাবিতে বেড়া সিএন্ডবি মোড়ে বেড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আসিফ শামস রঞ্জনের নেতৃত্বে পৃথক একটি মিছিল বের হয়।
মিছিল শেষে আসিফ শামস রঞ্জন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন বারবার নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করছে। তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও দলীয় অফিস ভাঙচুর করেছে। এ সময় পুলিশ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে, বহির্বিশ্বের কাছে শেখ হাসিনা সরকারকে ছোট করতেই ষড়যন্ত্র করছেন।
নিজেরাই হামলা করে মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রচারণায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ।