টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। দেশে একটা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে, এটাই স্বাভাবিক। এটাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কথা এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেটাই হয়েছে।
রোববার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত মাসিক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। লতিফ সিদ্দিকী টাঙ্গাইল-৪ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন। গত ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব এসেছে, এটা নিরসন করতে হবে। সকলে মিলেমিশে দেশটাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে।’
লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘পঁচাত্তর সালে বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে, তারা নাকি গণতন্ত্র দিয়েছে; এটা শুনে আমি বিব্রত হই। গণতন্ত্র দেওয়ার জিনিস না, গণতন্ত্র বোধের বিষয়, অনুভবের বিষয়, ভাবনার বিষয়, ধারণ করার বিষয়।’
নির্বাচন পরবর্তী নানা বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘জীবনের চলমানতায় আনন্দ-বেদনা-বিষাদ থাকবে। কিন্তু আমাদের জীবন যেন প্রেমহীন না হয়, ভালোবাসাহীন না হয়। আমরা দ্বন্দ্ব করব, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, প্রতিযোগিতা করবো। কিন্তু প্রতিশোধ পরায়ন হবো না। আমরা অসহিষ্ণু হব কিন্তু উত্ত্যক্ত হবো না। তাহলেই আমরা আইনশৃঙ্খলার বিধি বুঝতে পারব।’
আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘১৮৬২ সালের পুলিশ ম্যানুয়ালই এখনও আমরা প্রায়ই অনুসরণ-অনুকরণ করছি। অনুসরণ এবং অনুকরণ করে আমরা খুব বেশি দূর এগুতে পারব না। আমাদের নতুন ভাবনা ভাবতে হবে। আমরা ডিজিটালাইজেশনের কথা বলি, স্মার্টনেসের কথা বলি; আমরা গরুরগাড়ির চেতনায় লালিত চিন্তা নিয়ে ডিজিটালাইজ এবং স্মার্ট হতে পারব না। আমাদের চৌকষ হতে হবে। চৌকষ হওয়া অনেকটা কঠিন। চৌকষ হতে গেলে আমাদের মননকে, চেতনকে, ভাবজগতকে পরিশিলীত রূপ দিতে হবে। এই পরিশীলন আইন দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে হয় না; পরিশীলন সাধনা দিয়ে করতে হয়। দীর্ঘ সময়ের সেই সাধনা আমাদের ২০৪১ সালে স্মার্ট করে গড়ে তুলবে।’
টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ওলিউজ্জামান, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এসএম সিরাজুল হক আলমগীর, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান আনছারী, ঘাটাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার আশরাফুজ্জামান স্মৃতি প্রমুখ।
সভায় বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাসহ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা অংশ নেন।